fani

স্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে দেশে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত আনে তাহলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, সরকার ১৯ উপকূলীয় জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে এবং চার হাজার ৭১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

প্রতি জেলায় দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২০০ টন চাল ও পাঁচ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

খুলনা ও আশপাশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকাগুলোতে শুক্রবার সকাল নাগাদ ‘ফণি’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব টের পাওয়া যাবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। তারা মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে।

অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মোংলা বন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার ও পায়রা বন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একই সংকেত উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর জন্যও প্রযোজ্য হবে।

এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ সকালে ‘ফণি’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাবে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে এসব এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বৃহস্পতিবার সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

সন্দ্বীপ ও হাতিয়া সমুদ্র পথে নৌযান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সেই সাথে বড় জাহাজগুলোকে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here