গাছে বেঁধে শিশু নির্যাতন: নির্যাতনকারী গ্রেফতার   এম. আমিনূর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগরে গাছে বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনকারী মোস্তফাকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় নির্যাতনের শিকার শিশু নাসির তরফদারের পিতা হামিদ তরফদার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজহারভূক্ত আসামি করে গোলাম মোস্তফাকে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃত মোস্তফার দাবি, জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। শিশু নির্যাতনের এই কাহিনী পরিকল্পিত এবং সাজানো। গত ১৬ জুলাই এ ঘটনা ঘটলেও সমপ্রতি বিষয়টি জানা জানি হয়।

সিলেটের শিশু রাজন হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে যখন সারাদেশ সোচ্চার ঠিক এমন সময় আবারও শিশু নির্যাতনের মত এমন ঘটনা ঘটলো সাতক্ষীরার শ্যামনগরের পল্লীতে।

নির্যাতনের শিকার শিশুরা হলো-জয়নগর গ্রামের ইসমাইল তরফদারের ছেলে ইয়াছিন (৮) ও হামিদ তরফদারের ছেলে নাছিম (৯)। এরা দু’জনেই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। নির্যাতনকারী মোস্তফা ওই গ্রামের ইমরান আলী মোড়লের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবেশী মোস্তফার জায়গার উপর দিয়ে গড়ে ওঠা পায়ে হাঁটা রাস্তার উপর খেলছিল ইয়াছিন ও নাছিম। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে মোস্তফা তাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা বাড়ি না গিয়ে সেখানে খেলা করায় রাস্তায় কাদা হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফা তাদের দু’জনকে একই গাছে বেঁধে তাদেরকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন চালায়।

খবর পেয়ে ইয়াছিন ও নাছিমের অভিভাবকরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করতে উদ্যত হন মোস্তফা। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, মোস্তফা তদরফদার জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সবই মিথ্যে ও বানোয়াট। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমার প্রতিপক্ষরা এভাবে শিশু দু’টিকে বেধে রেখে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্টু তদন্তের দাবি জানান।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনামুল হক জানান, এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শিশু নাসিরের পিতা হামিদ তরফদার বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা করেছে। এই মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, বেধে রাখার ঘটনা ঠিক। তবে জমিজমার বিরোধ নিয়ে বিষয়টি আরো জটিল আকার ধারন করেছে। বিষয়টি যথাযথ দতন্ত করে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মীর মনির হোসেন জানান, হামিদ তরফদারের সাথে মোস্তফা তরফদারের জমি নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। যে রাস্তার উপর শিশু দু’টি খেলা করছিল ওই রাস্তা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। শিশু দুটিকে বেঁধে রাখার ঘটনা সত্য, তবে তাদেরকে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। বেঁধে রাখার কিছুক্ষন পরে আবার তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এভাবে বেঁধে রাখা ঠিক হয়নি। এনিয়ে এতো কিছু হবে তা ভাবতে পারেনি গোলাম মোস্তফা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here