গাইবান্ধা : গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মদনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশুতোষ বর্মণ (৪০)। কয়েক বছর আগেও বেকার আশুতোষের চোখেমুখে ছিল বিষাদের ছায়া। তবে অনেক চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে বর্তমানে মুরগির খামার করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন তিনি।সংসারে অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি আশুতোষ। লেখাপড়ার ইতি টেনে নেমে পড়েন জীবিকার সন্ধানে।অল্প বয়সেই জীবিকার তাগিদে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেন আশুতোষ। স্বপ্ন দেখেন সৎ উপার্জনে বড় হওয়ার। এ পথ যে কত কষ্টের তা তার বুঝতে দেরি হয়নি। তারপরও থেমে থাকেননি তিনি।
পরিশ্রমী ও আত্মপ্রত্যয়ী আশুতোষ বর্মণ সহজ উপায়ে বৈধভাবে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে নেন। নিজের সঞ্চিত স্বল্প পুঁজি দিয়ে প্রথমে ১০০টি লেয়ার মুরগি কিনে পালন শুরু করেন। পরে একটি ছোট্ট আকারের খামার গড়ে তোলেন। আস্তে আস্তে তার খামারে মুরগির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে তিনি স্থানীয় যুব উন্নয়ন ও প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ নেন।আশুতোষের খামারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে খামারটিতে ৬০০টি ডিম পাড়া মুরগি রয়েছে, যা থেকে দৈনিক প্রায় সাড়ে ৫০০ ডিম পাওয়া যাচ্ছে। আশুতোষ বলেন, প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকার ডিম বিক্রি করছেন। খামারে প্রতি মাসে ব্যয় হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। লাভ থাকছে ৪০ হাজার টাকার মতো।আশুতোষের স্ত্রী মনিকা রানী বলেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনই খামারে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন। তিনিও আশুতোষের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ও পার হয়ে পারেননি। তাদের চার ছেলেমেয়ে। সবাই স্কুলে পড়ছে বলে জানান মনিকা রানী। ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নের কথা বলেন তিনি।আশুতোষ বর্মণ মুরগির খামারের পাশাপাশি বাড়ির পাশেই সবজির আবাদ করে সুনাম কুড়িয়েছেন। উন্নত জাতের শাকসবজি উৎপাদনের কারণে কৃষিমেলায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আশুতোষকে একাধিকবার আদর্শ কৃষক হিসেবে পুরস্কৃত করেছে কৃষি বিভাগ।পজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে আশুতোষ বর্মণ একজন রোল মডেল হতে পারেন। তার উদ্যমকে স্বাগত জানিয়ে আমরা সব সময় তার পাশে থাকার চেষ্টা করি।