মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন পরবর্তীতে সময়ে গণধর্ষণের শিকার পাঁচ নির্যাতিতা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধন-সমাবেশ করেছে।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন-সমাবেশ করেন তারা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, নির্যাতিতা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনা প্রায় একই সুঁতোয় গাঁথা। বর্তমান চিত্র সবার ক্ষেত্রে একই। ইতোমধ্যে ৭-৮ মাস পার হলেও বেশিরভাগ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়নি পুলিশ। ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে অনেক আসামি। ফলে আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেয়ার জন্য নির্যাতিতাদের পরিবার-পরিজনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। অন্যথায় বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়াসহ হত্যারও হুমকি দিচ্ছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নির্যাতিতা নারী ও তাদের পরিবার। পুলিশ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বক্তারা প্রতিটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল, পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও তদন্তপূর্বক দ্রুত বিচার কার্য শুরু করার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, এক নারীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় নৌকা মার্কার লোকজন। পরে ওইদিন দিবাগত রাত ১২টার দিকে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. রুহুল আমিনের নেতৃৃত্বে তার ১০-১২ জন অনুসারী রোববার গভীর রাতে তাদের ঘরের ভেতরে পুলিশ পরিচয়ে ঢোকে ভিকটিমের স্বামী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে মারধর ও তার সন্তানদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে রেখে ঘরের বাইরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করে। এ সময় তিনি প্রাণ ভিক্ষা চাইলে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়ির উঠান সংলগ্ন পুকুর ঘাটে ফেলে চলে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পরে এই ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী সিরাজ উদ্দিন বাদী হয়ে ১২জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া ১৮ ডিসেম্বর রাতে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে বাড়ির সিঁধ কেটে ভেতরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ করে একই এলাকার জাকের হোসেনসহ ব্যক্তি।

অপরদিকে গত ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন রাতে স্থানীয় চরজব্বার বাজার থেকে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরছিলেন এক নারী। পথে ইউসুফ মাঝি ও বেচু মাঝির নেতৃৃত্বে ১০-১২ জন গতিরোধ করে স্বামীকে মারধর ও আটকে রেখে ওই নারীকে পাশের কলা বাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের পূর্ব শুল্লকিয়া গ্রামে পারভিন আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ তাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here