একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জেরে পত্রিকার প্রচ্ছদে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি কার্টুন ছেপেছে জার্মানির সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘‌দের স্পিগল।। তাতে ‌একহাতে গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার প্রতিমূর্তি হিসেবে পরিচিত ‘‌স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’‌–র কাটা মুণ্ডু এবং অন্য হাতে রক্তমাখা ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে নিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে।

শরণার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ থেকে শুরু করে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তুলোধনা করতেই কার্টুনটি এঁকেছেন কিউবা বংশোদ্ভূত মার্কিন শিল্পী এবং রাজনৈতিক শরণার্থী ইদেল রডরিগেজ। কার্টুনের পাশে‌ ট্রাম্পের নির্বাচনী স্লোগান ‘‌আমেরিকা ফার্স্ট’‌ লেখা রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জার্মানির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিক্ততা বেড়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। শরণার্থী নীতি নিয়ে তার পাল্টা আক্রমণ করেন মার্কেলও। তবে পত্রিকার প্রচ্ছদটি নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

জার্মান সংবাদপত্র ‘‌ব্লিড’‌ আবার ট্রাম্পের কার্টুনটিকে আইএস জঙ্গি মোহম্মদ এম ওয়াজির সঙ্গে তুলনা করেছে। জঙ্গি সংগঠনের বেশ কিছু ভিডিওতে নিরীহ মানুষের শিরচ্ছেদ করতে দেখা গিয়েছিল তাকে।

এদিকে, ওই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রচ্ছদটির নিন্দা করেছেন সেখানকার ‘‌ফ্রি ডেমোক্র‌্যাটিক পার্টি’‌–র আলেকজান্ডার গ্র‌্যাফ ল্যাম্বসডোর্ফও। তার মতে, ‘‌রুচিহীনের মতো কাজ হয়েছে। ট্রাম্প নয়, আদতে সন্ত্রাসের কবলে থাকা মানুষদের অপমান করা হয়েছে। ’‌

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যঙ্গচিত্র শিল্পী ইদেল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, ‌‘‌স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’–কে সামনে রেখেই এতদিন গোটা বিশ্বে ‌গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা এবং স্বাধীনতার বার্তা দিয়ে এসেছে আমেরিকা। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসা মাত্রই সেই সব ধ্যান–ধারণার টুঁটি চেপে ধরেছেন। এককথায় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। কার্টুনটির মাধ্যমে তিনি সত্যিটা তুলে ধরার চেষ্টা কেরছেন মাত্র।

পত্রিকার সম্পাদক ক্লউস ব্রিঙ্কবেউমারের মতে, ‘‌সেই ১৮৮৬ সাল থেকে অভিবাসী ও শরণার্থীদের নির্দ্বিধায় দেশে স্বাগত জানিয়ে আসছে আমেরিকা। লোকমুখে ফিরত সেখানকার গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার কথা। ট্রাম্পের হাতে যার নিধন ঘটেছে। ’‌

তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও ট্রাম্পকে তুলোধনা করেছিল ‘‌দের স্পিগল। ’‌ নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয়ী হওয়ার পর পত্রিকার প্রচ্ছদে ধূমকেতুর আদলে ট্রাম্পের মুখ আঁকা হয়েছিল। যে কিনা পৃথিবীকে গ্রাস করতে এগিয়ে আসছে।

গত সপ্তাহে সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক, ইরান, সুদান, সোমালিয়া এবং ইয়েমেন—এই সাতটি মুসলিম দেশ থেকে আসা মানুষের আমেরিকায় প্রবেশ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন ট্রাম্প। তারপরই ফের পত্রিকার প্রচ্ছদে ট্রাম্পের বিতর্কিত কার্টুনটি আঁকেন ইদেল রডরিগেজ। ট্রাম্প বিরোধীরা অবশ্য এতে খুশি। সোশ্যাল মিডিয়া তো বটেই, বার্লিনে আয়োজিত ট্রাম্পের শরণার্থী নীতি বিরোধী মিছিলের পোস্টারেও জায়গা পেয়েছে ছবিটি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here