মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু, স্টকহলম::

2015-04-16 11.58.26নির্বাচন হতে এখনো তিন বত্সর ছয় মাস বাকি। অর্থাত নির্বাচন হবে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে।এর পূর্বে মধ্যবর্তী নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই বলে ইতিমধ্যে সরকার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে।অন্যদিকে বিএনপি জামায়াত জোট সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো বার বার মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।সেই সাথে মধ্যবর্তী নির্বাচনের পক্ষে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশের কাছে ধরনা দিচ্ছে।আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করে বিএনপির আদৌ কোনো লাভ হবে কি না সন্দেহ রয়েছে।কারণ মধ্যবর্তী নির্বাচন হওয়া না হওয়া নির্ভর করবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর,বিদেশীদের উপর নির্ভর করে নয়।এই সহজ অংকটা কি বিএনপি বুঝতে পারছে না। নাকি বুঝে না বুঝার ভান করছে।

৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন সংবিধান রক্ষার্থে আমাদের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করতেই হবে। এবেপারে তিনি বিরোধী দলগুলোর প্রতি জালাও পোড়াও আর  সহিংসতা  থেকে সরে এসে নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য  অনুরোধ জানিয়েছিলেন।তিনি আরো বলেছিলেন আপনারা এই  নির্বাচনে আসুন, পরবর্তিতে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়া হবে।কিন্তু বিএনপি জামায়াত জোট হাসিনার অনুরোধকে প্রত্যাখ্যান করে দেশের পরিস্থিতিকে এক ভংকর অবস্থায় নিয়ে যায়।এইসময় তারা তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের দাবিতে জালাও পোড়াও আর সহিংসতার পথ বেছে নেয়।তাদের একটাই দাবি ছিল তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন।তারা তখন শেখ হাসিনার অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

বিএনপি জামায়াত জোটের এই আন্দোলনে সাধারণ জনগণ সমর্থ দেয়নি।শুধুমাত্র দলীয় সমর্থক ও কর্মীদের  নিয়ে করা তাদের এই আন্দোলন অবশেষে বের্থ হয়।অন্যদিকে এইসময় বিএনপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকেও দেখা যায়নি রাজপথে।এধরনের আন্দোলনের প্রশ্নে  দলের ভেতরে মতানৈক্য দেখা দেওয়াতে সফল হয়নি আন্দোলন।তাছাড়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারও ছিল তাদের নীতিতে অটল। তারা বার বার বলেছে জাতীয় সংসদে বাতিল হওয়া অগণতান্ত্রিক তত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। নির্বাচন হবে নির্বাচিত সরকারের অধীনে। শেষ  পর্যন্ত  নির্বাচন  হয়েছে।বিএনপি  জামায়াত  জোট  সহ  আরো  কিছু  বিরোধী  দল  নির্বাচনে  বয়কট  করেছে।রাজনীতির এই পরিস্থিতির সুযোগ  নিয়েছে  এরশাদের  জাতীয়  পার্টি।সরকারের  আহবানে সারা  দিয়ে  তারা  নির্বাচনে  অংশগ্রহন  করে।এখন তারা সংসদে বিরোধী দলের আসন দখল করে নিয়েছে।অথচ বিএনপি নির্বাচনে এলে ক্ষমতায় যেতে না পারলেও এই আসনে তাদেরই বসার কথা ছিল।

 ৫ জানুয়ারীর  নির্বাচন একটি  সঠিক নির্বাচনের মতো নির্বাচন না হলেও  সরকার  এখন  শক্তভাবেই  ক্ষমতায়  বসে  আছে।বর্তমান  পরিস্থিতিতে সরকার  কখনই  একটি  মধ্যবর্তী  নির্বাচনে  যাবে  না  বলেই  মনে  করা যেতে পারে।অন্যদিকে  সরকার  থেকে  বলা  হচ্ছে  আমাদের অনুরোধ  না  শুনে  সেদিন  আপনারা  দেশ  ধংসের  পথ  বেছে নিয়েছিলেন।তাহলে  এখন  আবার  মধ্যবর্তী  নির্বাচনের  দাবি  আসবে  কেন?আপনারা  তত্বাবধায়ক সরকারের  দাবি নিয়ে  সংগ্রাম  করে  জনগনের  সমর্থন  পাননি।আপনারা  নির্বাচনে  অংশগ্রহন  না  করে  ভোট  সেন্টারগুলো  জালিয়ে  দিয়েছিলেন।আন্দোলনের নামে  সরকারী ও বেসরকারী  সম্পদ  ধ্বংস  করেছেন।জীবন্ত  মানুষকে  পুড়িয়ে  মেরেছেন।আর এখন আবার  দাবি  করছেন  মধ্যবর্তী  নির্বাচন। সুতরাং এখন পরিষ্কারভাবে বলা যেতে পারে সরকার ২০১৯ সালের পূর্বে কোনো মধ্যবর্তী নির্বাচনে আর যাবে না।

এখন প্রশ্ন হলো এই পরিস্থিতিতে বিএনপির কি করা উচিত? রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন দলকে গুছিয়ে আনার একটা সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে বিএনপি।বিগত আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে দল ও দলের নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে।বার বার বলা সত্বেও তার ডাকে সারা দেননি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেক নেতারা।এই কারণেই এখন বিএনপিকে দেশ ও বিদেশে নুতন নেতৃত্ব তৈরী করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।সুবিধাবাদী ও বের্থ নেতাদের থেকে দলকে মুক্ত করে আনতে হবে। কওয়ানটিটি নয় কওয়ালিটি নীতিতে এগুতে হবে।২০০৫ ক্ষমতা হারানোর পর দীর্ঘ এই ১০ বছর ছয় মাস দলটির নেতৃত্বের ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। বর্তমানে দলের ভেতরে একটা বড় অংশ জামায়াতকে বাদ দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আগ্রহী।অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জামায়াত ছাড়তে রাজি নয়।এমনি এক পরিস্থিতিতে দলটি আগামী দিনের রাজনীতিতে কোন পথে হাটবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

 সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়া তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেছেন। বিএনপি নেত্রীর এই দাবি সরকারের কাছে  গ্রহণযোগ্য হবে না বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। কারণ তত্বাবধায়ক সরকার আর নিরপেক্ষ সরকার দুটি শব্দের মর্মকথা একই।অর্থাত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে নুতন সরকার গঠনের মাধ্যমে একটি নির্বাচন।এখন যদি এই দাবিকে সামনে রেখে বেগম খালেদা জিয়া জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে নামেন তাহলে তিনি কতটা সফল হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। খালেদা  জিয়া  কি  তাহলে  আবারও  ভুল  করতে  যাচ্ছেন? পারবেন  কি  তিনি  নিরপেক্ষ  সরকারের  অধীনে  নির্বাচনের  দাবিতে  আন্দোলন  করে  সফল  হতে?কারণ  সরকার  কখনই  এই  দাবি  মানতে  চাইবে  না। তারা  সব  সময়ই  বলে  আসছে  একটি  নির্বাচিত  সরকারের  অধীনেই  হবে  নির্বাচন।তবে  নির্বাচন  সংক্রান্ত

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here