স্টাফ রিপোর্টার :: দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে এ হুশিয়ারি দেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি, নির্বাচন করেছি। এবার খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।’

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি হন খালেদা জিয়া। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর থেকে হাসপাতালেই চিকিৎসারত রয়েছেন খালেদা জিয়া।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমাদের একজন নেতাকর্মীও ঘরে বসে নেই। তারা লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে। বিজয়ের মধ্যে দিয়েই খালেদা জিয়া মুক্ত হবে।

বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে- এমন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না, কারও সাহায্য নিয়ে চলতে হয়। তিনি কিছুই খেতে পারেন না। কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ পাউন্ড ওজন কমে গেছে।

বর্তমান সরকার আইন ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা নিজেরাই এই সংবিধানকে কেটে-কুটে তছনছ করে দিয়েছে। তারা আজকে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়াই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে দখল করে আছে। এরা জনগণের সরকার নয়।

‘৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্যে যে গণতান্ত্রিক চেতনা তা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের জোরে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তার নামে মামলা করা হয়। এভাবে বিচারবিভাগ চলতে পারে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া যে মামলায় আজ কারাগারে সে মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে কারাগারে রাখার কারণ বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার তাকে ভয় পায়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য গায়ের জোরে তাকে কারাগারে রেখেছে। তাকে কারাগারে রাখার মধ্য দিয়ে সারা বাংলাদেশকে আজ কারাগারে রাখা হয়েছে। কারণ তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, এই সরকার ভোট চোর, টাকা চোর, সব কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত। এ দেশে যদি গণতন্ত্র ফিরে আনতে হয়, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হয়, তাহলে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন।

বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নেতাকর্মীরা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here