স্টাফ রিপোর্টার :: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কোমল পানীয় এবং ফাস্টফুড খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন চিকিৎসা বলেন এটা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এটি শরিরের জন্য ক্ষতিকর।বাড়ি-ঘরে রান্নার প্রচলন উঠেই যাচ্ছে- কথায় কথায় পরিবারের লোকজন হোটেলে গিয়ে খেয়ে আসে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি আমাদের কালচারকেও নস্ট করে। মোবাইলের এই যুগে একসঙ্গে একাধিকজনের সঙ্গে প্রেমের প্রবণতা বেড়েছে, এর পরিণাম ভয়াবহ হচ্ছে, বিয়ে বিচ্ছেদ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমাদের নিয়ে অনেক খারাপ কথা শুনি। মোবাইল নিয়ে প্রেম কর। প্রেম কর, খারাপ না। একলগে পাঁচজনের লগে কইরো না। একজনের লগে প্রেম কইরা ১৫ দিন পরে আরেকজনের লগে কর, এটা করা ঠিক নয়।
একে গুরুতর সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে চিহ্নিত করে আবদুল হামিদ বলেন, “এটা দূর করতে হবে। দূর করতে হবে তোমাদের। তোমাদের নেতৃত্ব দিতে হবে। এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। যারা এমন করে তাদের অ্যাভয়েড করতে হবে।”
হাতে হাতে স্মার্টফোন আসায় এখন যে কোনো ঘটনায় সমস্যার সমাধানের দিকে না গিয়ে ঢালাওভাবে ভিডিও করার প্রবণতা নিয়েও কথা বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
এ প্রসঙ্গে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই কয়দিন আগে বনানীতে আগুন লাগল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেতেই পারে না, পাবলিকের ভিড়। সবাই ভিডিও করছে। হোয়াট ননসেন্স। এ ধরনের মানসিকতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। ছাত্রদের এসব বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”
আবদুল হামিদ বলেন, “শিক্ষাখাতে বেসরকারি বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বৈশ্বিক চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞান অর্জন ও সম্প্রসারণের একটি উপযুক্ত কেন্দ্র। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও ক্রীড়াসহ সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞানর্জনের সুযোগ পাবে। কিন্তু দেশের বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আবদ্ধ বাণিজ্যিক ভবনে পরিচালিত হয়, যা উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার পথে বড় অন্তরায়। আমাদের মনে রাখতে হবে শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। যারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন তাদেরকে সব নিয়মনীতি মেনেই চালাতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। প্রয়োজনে ইউজিসি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং উচ্চশিক্ষার গুণগুত মান নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিচালিত হতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা যাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে এসে প্রতারণার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।“
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৭০৬ জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েটসহ ১৬২০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি সনদ গ্রহণ করেন। এদের মধ্যে দুইজনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল, দুইজনকে ভাইস চ্যান্সেলর পদক, পাঁচজনকে ডিনস পদক এবং পাঁচজনকে ট্রাস্টি পদক দেওয়া হয়।