মিলন কর্মকার রাজু কলাপাড়া প্রতিনিধি:: নি¤œচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ গোটা উপকূলীয় এলাকায় তিন দিনের প্রবল বৃষ্টিপাত, ও অমাবস্যার জো’র প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে সম্পুর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও চার কিলোমিটার।
এ ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী দশায় পড়েছে। এসব গ্রামের আমন ফসলের ক্ষেত এখন ৩-৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। প্রচন্ড ঝড়ো বাতাসে অন্তত অর্ধশত পরিবারের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পানি বন্দী হয়ে পড়ায় বেড়িবাঁধের বাইরের ও ভিতরের শত শত পরিবারে রান্না পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এর ফলে মানুষের অবর্ননীয় দুর্ভোগ এখন চরম দূর্যোগে পরিণত হয়েছে।
কলাপাড়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া, মুন্সিপাড়া, নাওয়াপাড়া, চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, বানাতিপাড়া, ১১ নং হাওলা, থঞ্জুপাড়া, পশুরবুনিয়া, বড় পাচনংসহ ১৫ টি গ্রাম এবং মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, সুধিরপুর, কমরপুর, পুরান মহিপুর গ্রামের মানুষ। এই দুই ইউনিয়নে রামনাবাদ পাড়ের প্রায় চার কিলোমিটার এবং আন্ধারমানিক নদীতে প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পুর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে এখন ভাসছে।
নিজামপুর গ্রামের সিদ্দিক মুন্সী জানান, তাদের ঘরবাড়ি জোয়ারের ¯্রােতে ভেসে গেছে। প্রায় ২০টি পরিবারের ঘরবাড়ি কমবেশি বিধ্বস্ত হয়েছে। নিজেরা বসবাসসহ গবাদিপশু হাসমুরগি নিয়ে এসব মানুষ চরম বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছেন।
এদিকে প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস ও উত্তাল ঢেউয়ের তান্ডবে কুয়াকাটা সৈকত লন্ডভন্ড লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সৈকত ঘেষা শতশত গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সৈকতের মিরাবাড়ি ও খাজুরায় বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রিভার সাইটের স্লোপসহ মূলবাঁধের অর্ধেকটা সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। কুয়াকাটা পৌরএলাকার মানুষ রয়েছেন জলোচ্ছ্বাস আতঙ্কে। একদিকে বিরামহীন বৃষ্টিপাত, সঙ্গে পুবের দমকা ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি নিত্যকার দুই দফা অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে কলাপাড়ার দুই লক্ষাধিক মানুষ এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তানভীর রহমান ও কলাপাড়া থানার ওসি মো.আলাউদ্দিন শনিবার দুপুর থেকে দূর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং শুকনো খাবার বিতরন করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবুল খায়ের জানান, বেড়িবাঁধ বিধ্বস্তের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানান লালুয়া ও মহিপুরে প্রায় চার কিমি বেড়িবাঁধ সম্পুর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া চর ধুলাসারে, রমজানপুরে বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।