মোঃ আরিফ হোসেন :: করোনা ভাইরাস রোধে রোহিঙ্গা শিবিরে জি ফোর নেটওয়ার্ক চালুসহ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করছেন মানবাধিকারকর্মী এবং মানবিক সেবায় নিয়োজিত সংগঠনসমূহের কর্মীরা।

মঙ্গলবার গনমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারি মানবাধিকারকর্মী এবং মানবিক সেবায় নিয়োজিত সংগঠনসমূহের কর্মীরা, করোনা মহামারী কালে গণহত্যাসহ অপরাপর নৃশংস অপরাধসমূহের শিকার প্রায় ৪০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশ ভূখন্ডের নৌ-সীমানা থেকে উদ্ধার করার জন্য বাংলাদেশের জনগণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারসমূহ এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং সাধুবাদ জানাই। একই সাথে, করোনা মহামারী কালে প্রশংসনীয় এবং বিরল মানবিক আচরণের প্রেক্ষাপটে আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য-স্বাস্থ্যের অধিকার, অবাধ তথ্য প্রবাহ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রয়োজনীয় চলাচলের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আবেদন জানাই।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে অতি-ঘনবসতির কারণে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশংকায় আমরা উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১,১১৬জন মানুষ বসবাস করে। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বসবাস। স্বাভাবিক ভাবেই এখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা এখানে মেনে চলা সম্ভব নয়। ফলে কোন ভাবে রোহিঙ্গা শিবিরে কোভিড ১৯ সংক্রমণ হলে তা মারাত্মক গতিতে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। আমরা জানি, সরকার এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এখনও শিবিরগুলিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা, বিশুদ্ধ পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধার অভাব রয়েছে। যদি রোহিঙ্গা শিবির অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণহীন প্রাদুর্ভাব ঘটে, তবে এটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, উখিয়া এবং টেকনাফ অঞ্চলে মোবাইল এবং ইন্টারনেট যোগাযোগের নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ না থাকায়, মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত কর্মীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ বাধাগ্রস’ হচ্ছে। ফলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা সম্পর্কে জানা যাচ্ছে না এবং যারা এদের সংস্পর্শে কাজ করছেন তাদের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে এবং প্রতিরোধমূলক কর্মকান্ডের গতি কমিয়ে দিচ্ছে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, গবেষক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ড. রিদোয়ানুল হক, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি উপাচার্য, অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পীস এন্ড জাস্টিস’র নির্বাহী পরিচালক ড. মঞ্জুর হাসান, একশন এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রী ডিরেক্টর ফারাহ কবীর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনম, কোস্ট ট্রাষ্ট’র নির্বাহী পরিচালক, রেজাউল করিম চৌধুরী, নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী মাহীন সুলতান, নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী এডভোকেট কামরুন নাহার, নাগরিক উদ্যোগ’র প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ নূর খান, এমেরিকান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক কাজী ওমর ফয়সাল, লেখক রেহনুমা আহমেদ,  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’র শিক্ষক সায়েমা খাতুন, নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. মুবাশের হাসান, শিক্ষক ও গবেষক ড. স্বপন আদনান, আইনজীবি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল নোমান, আইনজীবি রুহি নাজ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, লেখক ও গবেষক পারসা সানজানা সাজিদ, আইনজীবি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সাইমুম রেজা তালুকদার, মানবাধিকার কর্মী ফরিদা আক্তার, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, মানবাধিকার কর্মী শিরীন প হক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here