ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার লিজা বলেন, বৈশ্বিক করোনা সংকটে এখন ঘরে বসে সময় কাটাতে হচ্ছে। সংকটময় মুহুর্তে সচেতনতা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। যে সময়টাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল সেই সময়ে আমাদের নিজ বাসায় অবস্থান করে নানা রকম আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। করোনা ভাইরাস সংক্রামনের জন্য দীর্ঘ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস করতে হচ্ছে। করোনাকালীন সংকটে সারাদেশব্যপী বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব শরীরে ক্লাসে অংশ গ্রহণ।ফলে বাসায় বসে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছি। বিভিন্ন ধরনের বই পড়ছি। এভাবেই বাসায় বসে সময় কাটছে। আতঙ্ক থেকে বাঁচতে নিজের পরিবারের কোন সদস্য বা কোন সহপাঠী আক্রান্ত যাতে না হয় সে বিষয়ে খুব সচেতন থাকতে হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ কালীন এ সময়ে বাসায় থেকে নানা রকম আতঙ্কের মধ্যে সময় অতিবাহিত করছি। মোবাইলে গেমস খেলা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহপাঠীদের সাথে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ করছি। আশা করি খুব শীঘ্রই এই পরিস্থিতি থেকে দেশ তথা বিশ্ব তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম মাহমুদ বলেন, পড়াশুনা, টিউশনি, বন্ধুবান্ধব ফার্মেসি ক্লাব সবকিছু নিয়ে খুবই ব্যস্ত কাটতো ক্যাম্পাসে। এখন করোনাকালী সংকটে অবসর সময় বাসায় বসে সারাদিনই অনলাইনেই থাকা হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছি এই সময়ে। বাড়িতে ছোট বোন ক্লাস সেভেনে পড়ে,বোনকে পড়াচ্ছি দিনের কিছুটা সময়। আর সবচেয়ে আনন্দের সাথে যে কাজটি করেছি সেটা হলো শেরপুর ভেটস্ ক্লাবের পক্ষ থেকে ০২ টি অসহায় পরিবারকে ও আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ১০ টি পরিবারকে রমজানে সহায়তা করতে পেরেছি।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী হক জানান, বর্তমান করোনাময় পরিস্থিতিতে সবসময় উদ্বেগ ও আশঙ্কার মধ্যে প্রতিটি দিন পার করছেন। একদিকে করোনা অন্যদিকে প্রকৃতির বিরুপ আবহাওয়া, সবমিলিয়ে অবরুদ্ধ ও ঘরবন্দী জীবন। চারপাশের করোনাময় খবরে দিন দিন সাহস শক্তি লোপ পাচ্ছে, মনোবল হারিয়ে ফেলার মত এক অবস্থা।সারাদিন শুয়ে বসে থেকে অনলাইন ক্লাস করা ছাড়া আর তেমন কোনো কাজই নেই। এভাবে থাকতে থাকতে মাথা থেকে সুপ্ত বুদ্ধি গুলো হারিয়ে যাচ্ছে।পড়াশোনার প্রতি অনীহ সৃষ্টি হচ্ছে। ঘরবন্দী জীবনে বাবার দেওয়া একটা ফোন পেয়েছিলাম বলে এই অবসর সময় টা কিছুটা হলেও গেম খেলে পার করতে পারছি,নাহলে জীবন কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো কে জানে।বাবা নামক একটা টাকার মেশিন কিভাবে টাকা উপার্জন করে তা খুব কাছে থেকে দেখছি এবং উপলব্ধি করছি।পৃথিবী তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক মহান আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া জাহান বলেন, করোনার এই অবসর সময়টা অর্থ্যাৎ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে প্রথমদিকে পড়াশোনার চাপমুক্ত জীবন বেশ ভালোই কাটছিল কিন্তু ধীরে ধীরে বাসায় বসে থাকাটা একঘেয়েমী হয়ে উঠেছে। আমাদের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ছে প্রায় ৩ মাস আগে।পরীক্ষা সহ বাকি সব কিছুই চলছে অনলাইনে। যেমন- লেকচার, এসাইনমেন্ট, প্রেসেন্টে
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে সামিয়া মিম জানান, পড়ালেখা থেকে দূরে থাকাটা যেমন মজার আবার তেমন কষ্টেরও এমন এক ব্যতিক্রমধর্মী অনুভূতির। তিনি বলেন লকডাউনে পরে আছি আজ প্রায় তিন মাস। প্রথম ১ মাস ভালোই কেটেছে।পছন্দের সব কাজ করে সময় কাটিয়েছি যেমন: ছবি আকা, গান করা, নাচ করা, রান্না করা,নিজের যত্ন করা, পরিবারের মানুষদের যত্ন করা ইত্যাদি। কিন্তু এখন আর তেমন ভাবে এই করোনাময় পরিস্থিতিতে অবসর সময় কাটছে না।অনলাইনে নিয়মিত পরীক্ষা, ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, এসাইনমেন্ট সবই হচ্ছে কিন্তু শ্রেণী কক্ষে বসে যে সকল সহপাঠীদের সাথে মিলেমিশে একসাথে পড়ার অনুভূতি সেটা খুব মিস করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, ক্যাম্পাস যেন প্রতিনিয়ত আমায় ডাকছে। আবার কবে সবাই মিলে একসাথে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দিতে পারব, একসাথে কফি খেতে পারব সেই আশায় দিন গুনছি। সবার সাথে দেখা হবে সুস্থ পৃথিবীতে এই প্রত্যাশা রইল।