ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক ::
ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার (১৭ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে দূতাবাস বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। যার মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনাসভা, শিশুদের জন্য রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
সকালে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রদূত মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দিবসটি  উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলাম, কাউন্সেলর (পাবলিক ডিপ্লোমেসি) আরিফা রহমান রুমা এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মোঃ আব্দুল হাই মিল্টন এই বাণী পাঠ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বাঙালি জাতির বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীনতা অর্জনে মহান ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন ১৯৭১ সালে নয় মাসব্যাপী সশস্ত্র যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে আত্মপ্রকাশ করে। জাতীয় শিশু দিবসে রাষ্ট্রদূত বলেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১ প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি অভিভাবকদের প্রতি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, কৃষ্টি এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর মহান আত্মত্যাগ সম্পর্কে তাদের সন্তানদের জানানোর জন্য অনুরোধ করেন ।
রাষ্ট্রদূত ইমরান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেনও আলোচনায় অংশ নেন এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পূনর্গঠনে তার অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন।
বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে সকালের অনুষ্ঠান শেষ হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে কেক কাটেন। এরপর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গ্রেটার ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি শিশু-কিশোররা দেশাত্ববোধক গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। পরে রাষ্ট্রদূত ইমরান রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিনী জাকিয়া হাসনাত পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. এন. সিদ্দিক, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস, এবং সড়ক পরিবহন এবং জনপথ বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী উপস্থিত ছিলেন।
তিন পর্বের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-1) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি মোঃ আতাউর রহমান।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here