ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক ::
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত গণহত্যাকে স্মরণ করে স্থানীয় সময় শনিবার (২৫ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পাল্ন করা হয়েছে । এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
ঐদিনে পাকিস্তান সামরিক জান্তার কুখ্যাত অভিযান “অপারেশন সার্চলাইট”-এ নিহত সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে দূতাবাস এক কর্মসূচির আয়োজন করে।
মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সকালে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (কমার্স) মোঃ সেলিম রেজা এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মোঃ রাশেদুজ্জামান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহিদের মহান আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু করে।
তিনি ২৫ মার্চের গণহত্যাকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেন এবং উল্লেখ করেন যে, সেদিন নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি জান্তার পরিকল্পিত গণহত্যায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারান এবং ব্যাপক ধ্বংসলীলা সংঘটিত হয়।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
রাষ্ট্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানের পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
মিনিস্টার (ইকোনমিক) মোঃ মেহেদী হাসানও আলোচনায় অংশ নেন এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে ঐদিনে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বিষয়টি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচী শেষ হয়। কর্মসূচী পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মুহাম্মদ আব্দুল হাই মিল্টন।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here