“মানুষের দিকে”
-এলিজা খাতুন
মুমূর্ষু নগরের কানাগলি বর্ষাক্রান্ত
বহুদিন রিক্সার অবিরাম টুনটুন নেই
কতটুকু চেনাজানা হলে মানুষে মানুষে নিমন্ত্রণ হয় !
কপালের নিচে সুরমার রং!
নাকি প্রবল ব্যথার কালশিটে !
শনাক্ত হওয়ার সারিতে ঘামসিক্ত দাঁড়িয়ে কতদিন !?
ছায়া চাই… ছায়া চাই… নিঃশব্দ আর্তনাদ এখানে
ছায়াময় এক আকাশ দেখাবার নিমন্ত্রণ করেছো
আকাশের নীলে প্রেম হবে আর সমূদ্রে অবগাহন
বিকেলে কবিতামুখর সৈকত ছুঁয়ে হাঁটাহাঁটি
গোধুলীর সোনালী আলোয় দেখাবে ঢেউয়ের মায়া
দুচোখে সন্ধ্যা মেখে আলো-আধারিতে হৃদয় খুলবে
আরো কত কি !
অথচ চারিদিকে ঘনকালো ভয়ানক মেঘ !
উবে গেছে সাধ ; নি:সঙ্গ লাশ ও কাফনের ভিড়ে
দীর্ঘশ্বাসে মনস্থির করি জানিয়ে দেবো
দুচোখে আমার রাতের কোরাস, দুঃস্বপ্নের প্লাবন
চারপাশে মৃত্যুর হর্ণ, শ্বাস রোধের মহড়া
ইথারে ভেসে আসছে ফ্লয়েডের অন্তিম-ধ্বনি
‘আই কান্ট ব্রীদ’
যখন ভাবছি
মানুষের শ্বাস থেঁতলে দেয় তারা হাঁটু গেড়ে
মানুষের চোখ উপড়ে ফ্যালে তারা বর্বরতায়
মানুষের মেধা বিকৃত করে তারা কুটিলতায়
মানুষের পেশিতে জুলুম করে তাদেরই কাজে
মানুষকে বন্দী করে তারা-
ক্ষুধা দিয়ে, কালো বর্ণ দিয়ে, বুলেট দিয়ে …
তখন ভাবতে পারিনা সমূদ্র ও সৈকতের কথা,
আকাশের নীলে দুরন্ত ঘুড়ির কথা
ভাবতে পারিনা বাতাসে উড়ন্ত রেণুর কথা
দিগন্ত ঝরা বসন্ত আর ফুল ফোটার কথা
আলোর খোঁজে বের হয়ে দেখি
চতুর্দিকে অট্টহাসি হাসে নিকষ অন্ধকার
যুগের পরে যুগ চলে গেছে
পড়ে আছে সময়ের বিষ্টা
ইচ্ছার শিথানে তাই ভাঁজ করে রাখি
সাময়িক ইচ্ছাকে
এখানেই কি বাঁক নেবার কথা নয় !?
যদি যেতে চাই মানুষের দিকে !