এবার শিক্ষকের ব্যাত্রাঘাতে ২য় শ্রেণীর ছাত্র আহত হয়ে হাসপাতালেসৈকত দত্ত
, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: হারিয়ে যাওয়া ৫শত টাকা ফিরত চাওয়ার অপরাধে ৭বছর বয়সী ২য় শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছাত্র রিফাদকে বেত্রাঘাত করল বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক।

আজ সোমবার শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে বেথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে শিশু রিফাদ। শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় কুন্ডেচর কালু বেপারী কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

কালু বেপারী কান্দি গ্রামের রিপন ঢালীর ৭বছর বয়সি শিশু পূত্র রিফাদ ঢালী কুন্ডেচর কালু বেপারী কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। তার বাবার ৫শত টাকা নিয়ে পালিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। এর মধ্যেই তার টাকা হারিয়ে যায়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টাকা পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)’র রফিকুল ইসলাম কাছে জমা দেয়। টাকা পাওয়ার কথা শুনে রিফাদ ঢালী প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম এর কাছে তার বড় ভাই অত্র বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র তাকে নিয়ে টাকা চাইতে আসে।

তখন প্রধান শিক্ষক বড় ভাইকে ধমক দিয়ে তার প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে অপমান করে বের করে দিয়ে রিফাদকে কক্ষে দরজা বন্ধ করে রাখে। ভাইকে নিয়ে টাকা ফেরত চাওয়ার অপরাধে রিফাদকে অমানবিক ভাবে বেদম পিটিয়ে আহত করে।

রিফাদের চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসে এবং প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় রিফাদকে বাড়িতে পৌচ্ছে দেয়।

তাৎক্ষনিক রিফাদ’র মা স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা শারিরীক যন্ত্রণার কমানোর জন্য চেষ্টা করে। রিফাদের শারিরিকক যন্ত্রণা বেড়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রিফাদের মা, বাবা সোমবার নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ডাক্তার দেখান এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহার করে তার শারীরিক যন্ত্রণা কমিয়ে আনার জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যায়।

রিফাতের মা মেহেরজান বলেন, শিক্ষক হয়ে আমার বুকের সন্তানের সাথে পশুর মতো আচরন করলো। কেন করল? আমার বুকের মানিকের কি অপরাধ? আমাদের টাকা হারালো আবার আমাদের পেটালো এই কি শিক্ষা? এই পড়া শেখানো?  আপনারা লেইখা কি করবেন?  কে করবে এর বিচার? আমার বড় ছেলেকেও  অপমান করেছে।

রিফাতের মামা সাদ্দাম জানায়, তার ভাইগনা বাসা থেকে ৫শ টাকা চুরি করে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পর হারিয়ে যায়। উক্ত টাকা অন্য শিক্ষার্থী পেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা রাখে। উক্ত টাকা ফেরত চাওয়ার অপরাধে শিশু রিফাদকে শিক্ষকের কক্ষে আটকে অমানবিক নির্যাতন করে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা দেব রানী দাস (পূজা) ম্যাডামের সাথে আলাপ করলে তিনি রিফাদের ঘটনাটি পাশকাটিয়ে যেতে চায়। মাঝে মাঝে তিনি বলে,  ছেলে অপরাধ করলে মা/বাবা তাকে শাসন করে। রিফাদকে কি কারণে প্রধান শিক্ষক মারলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কিছুটা রাগান্নিত হলেন এবং সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরন করা শুরু করলেন। এরপর বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষক তাকে শান্ত করে।

মুঠোফোনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আসতেছি আপনারা একটু বসেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাটি শুনেছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here