অলংকার গুপ্তা, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি::
দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অবসান ঘটতে যাচ্ছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) সংলগ্ন মেসের বিদ্যুৎ বিলের। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির পর ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাঁশেরহাট এলাকায় গড়ে উঠে মেস বাণিজ্য।বাজার এলাকায় মেসে শিক্ষার্থীরা বসবাস করলেও শিক্ষার্থীদের দিতে হতো বাণিজ্যিক রেটে বিদ্যুৎ বিল।
যা শিক্ষার্থীরে জন্য অত্যান্ত ব্যায়বহুল হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘসময় জুড়ে প্রায় দুই শতাধিক মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের থেকে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ করতো পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। একাধিকবার হাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও সুরাহা হয়নি উক্ত সমস্যার। এতে করে বিপাকে পরে হাবিপ্রবিতে পড়ুয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে বিল দেয়ায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক বিলের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বিল প্রদান করতে হতো।
অবশেষে হাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামানের হস্তক্ষেপে এই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের সমাধানের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে হাবিপ্রবি ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক জানান, উপাচার্য মহোদয় শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আমলে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
এর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেসের বিদ্যুৎ বিল আবাসিকিকরণ কাজ এরইমধ্যেই শুরু হয়েছে। মেসের তথ্যাদি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। এর অংশ হিসাবে এরইমধ্যে একটি ফর্মে মেসসমূহের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে হাবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগ।
আশা করা যাচ্ছে অক্টোবর মাস থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা আবাসিক বিদ্যুৎ বিলের সুবিধা পাবে। এ ব্যাপারে মেস মালিকবৃন্দকে দ্রুত সময়ের মাঝে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবাসিক বিদ্যুৎ এর জন্য আবেদন করতে হবে পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য সংগ্রহের ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগে জমা দিতে হবে। এরপর সব মেসের তথ্য যাচাই বাছাই করে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগে তথ্য সরবরাহ করবে হাবিপ্রবি প্রশাসন। আশা করা যাচ্ছে অতি অল্প সময়ের মাঝেই শিক্ষার্থীরা এ সমস্যা থেকে রেহাই পাবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেস মালিক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ২০১২ সাল থেকে আকস্মিকভাবে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের মেসগুলোকে বাণিজ্যিকিকরণ করে দেয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমরা মেস মালিকরাও বিব্রতকর অবস্থায় পরে যাই। বিভিন্ন সময় দফায় দফায় পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলোচনা করেও সমাধান হয়নি উক্ত সমস্যার। অবশেষে হাবিপ্রবি উপাচার্যের হস্তক্ষেপে উক্ত সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। এ কারণ হাবিপ্রবির উপাচার্য মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
অন্যদিকে, বিদ্যুৎ বিলের সমস্যার সমাধান হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোরসালিন মিয়া বলেন, বর্তমান উপাচার্য মহোদয় যে শিক্ষার্থীবান্ধন তিনি তা পুনরায় প্রমাণ করলেন। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ নয় বছর ধরে বিদ্যুৎ বিলের কাছে জিম্মি হয়ে ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি হাবিপ্রবি সংলগ্ন মেস মালিকদের সাথে বসে ‘কন্টাক সিস্টেম’ বাতিলের উদ্যোগ নেয় তাহলে আর কোনো সমস্যাই থাকবে না হাবিপ্রবি সংলগ্ন মেসে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের। আশা করি এ ব্যাপারে প্রশাসন খুব শিগগিরই উদ্যোগ নিবে।
উল্লেখ্য যে, হাবিপ্রবি সংলগ্ন মেসগুলো বাণিজ্যিক মিটার হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ করে আসছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পরপরই হাবিপ্রবির গণমাধ্যম সংগঠন হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি কর্তৃক লাইভ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণের উদ্দেশে সর্বপ্রথম এ ব্যাপারে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংগঠনটি।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here