মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: খুলনার পাইকগাছায় অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত এক গ্রামের নাম কাটাবুনিয়া মধ্যচক। স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া। কাঁদা-মাটিতে কর্দমাক্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা। নির্বাচন পূর্ব প্রতিশ্রুতি ফুলঝুরি পরবর্তী আবারো মুখপাক্ষিক জনপ্রতিনিধিদের। এ ভাবে একে একে পার হলো ৪৮ বছর। ফলে ওই গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ ও শতশত শিক্ষার্থী চরম ঝুঁকি মধ্যে রাস্তাটিতে চলাচল করছে।
জানা যায়, উপজেলার গজালিয়া হাড়িয়ারডাঙ্গা বাঁধ হতে চাঁদখালীর কলমিবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটির দু’পাশে প্রায় ৩-৪শ পরিবার বসবাস করছে। উপজেলার বেশির ভাগ চলাচলের রাস্তা পিচ ঢালাই অথবা ইটের সলিং-এর কাজ হলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত এই রাস্তাটি কাঁচাই রয়েগেছে। রাস্তার পাশে মৎস্য লীজ ঘের থাকায় লীজের পানির ঢেউয়ে রাস্তা ভাংতে ভাংতে সরু ফাঁড়ি হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত প্রার্থীরা অত্র এলাকার রাস্তাটি সংস্কার বা নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর উক্ত রাস্তার দিকে আর কারও খেয়াল থাকে না। এমনিভাবে চলে আসছে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে। উক্ত গ্রামে একটি মাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী চাঁদখালী, গজালিয়া এবং মৌখালী গ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা রয়েছে।
অবহেলিত এ গ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হলে উক্ত ৩টি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রামের কাঁচা সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়। রাস্তার কোনো কোনো অংশ সম্পূর্ণ বিলিন হওয়ায় বাঁশ, তক্তা ও বিচুলী দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এখন এমন অবস্থা রাস্তা দিয়ে মটরসাইকেল, বাইসাইকেল, ভ্যান গাড়ী কিছুই চলতে পারে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় গ্রামটি আজও অনুন্নত ও অবহেলিত। এমনকি বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় লোকজনকে বাড়িতে গৃহবন্দি হওয়ার মত বাড়িতেই বসে থাকতে হয়। আর শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে তাদের স্কুল বন্ধ করে বাড়িতেই অবস্থান করে।
স্থানীয় নেছার উদ্দীন মোড়ল (৭৫) জানান, উপজেলার সকল ইউনিয়নে কমবেশী উন্নয়নের ছোয়া লাগলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত আমাদের এই গ্রামে কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। বারংবার আমরা বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো ফল পায়নি। বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য তারুণ্যের প্রতীক আক্তারুজ্জামান বাবুর দিকে তাকিয়ে আছি। তিনি আমাদের দুঃখ বুঝবেন বলে বিশ্বাস করি। তারক চন্দ্র মন্ডল (৬০), রঞ্জন মন্ডল (৬০), মহিউদ্দীন মোড়ল (৬৫) একই বক্তব্য পেশ করেন।