ডেস্ক নিউজ :: সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস আক্রান্তকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে উত্তর কোরিয়ায়। কোয়ারেন্টাইন পয়েন্ট থেকে বের হয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ওই ব্যক্তি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার ও দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক ডং-এ ইলবো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কোয়ারেন্টাইন থাকা অবস্থায় চিকিৎসককে না জানিয়ে গণশৌচাগারে গিয়েছিলেন ওই রোগী। শৌচাগার থেকে বের হলেই গ্রেফতার হন তিনি। এরপর করোনাভাইরাস বিস্তারের আশঙ্কায় ওই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক গুলি করে হত্যা করা হয়।

সম্প্রতি চীন থেকে দেশে ফিরেছিলেন ওই ব্যক্তি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে তাকে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। একনায়ক কিম জং উন তার যাবতীয় কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রায় পুরোটাই চীনের সঙ্গে বজায় রাখেন। ৯০ শতাংশ বাণিজ্যই হয় চীনের সঙ্গে। তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কে চীনের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। সেই সঙ্গে সব ধরনের পর্যটক প্রবেশও নিষিদ্ধ করেছে।

প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এক সামরিক আইন জারি করেছেন যেখানে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ দিন নয়, সন্দেহভাজনকে ৩০ দিন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে।

সম্প্রতি চীন ফেরত কাউকে আইসোলেশনে না রাখা হলে বা এ বিষয়ে কেউ নির্দেশ অমান্য করলে সামরিক আইনে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে ডিক্রি জারি করা হয়েছে সেখানে।

বিশেষ করে অনুমোদন ছাড়া কোয়ারেন্টাইন থেকে বের হলে তাকে মৃত্যুদণ্ডও দেয়া হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

সম্প্রতি চীন ভ্রমণ শেষে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করায় এক ব্যক্তিকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে পিয়ংইয়ং।

এদিকে বিদেশি পর্যটক নিষিদ্ধ, সড়ক ও রেলপথে চলাচলে ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপের পাশাপাশি চীনের সঙ্গে আকাশপথের যোগাযোগও কমিয়ে এনেছে উত্তর কোরিয়া। দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অসামরিক অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক সমাবেশ ঘটানো হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যু কিংবা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা না গেলেও ভাইরাস দেশটিতে ঢুকে পড়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের উঠে আসছে।

দেশটির কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, অনুন্নত ও দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও মরণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও মেডিকেল সরঞ্জাম নেই উত্তর কোরিয়ায়। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ সংকটের মুখে অসহায় হয়ে পড়বে কোরীয় জনগণ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here