হীরেন পণ্ডিত:: ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেম ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওইয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয় ও বিক্রয় হয়ে থাকে আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে।

বিশ্ব সভ্যতাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এই বিপ্লবের প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্যতা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে আমাদের দেশেও। এই আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতা তৈরি বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তুলে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নিরলস কাজ করছেন। আমরা জানি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হচ্ছে ফিউশন অব ফিজিক্যাল, ডিজিটাল এবং বায়োলজিকাল স্ফেয়ার। এখানে ফিজিক্যাল হচ্ছে হিউমেন, বায়োলজিকাল হচ্ছে প্রকৃতি এবং ডিজিটাল হচ্ছে টেকনোলজি। এই তিনটিকে আলাদা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

এর ফলে কী হচ্ছে? সমাজে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে? এর ফলে ইন্টেলেকচুয়ালাইজেশন হচ্ছে, হিউমেন মেশিন ইন্টারফেস হচ্ছে এবং রিয়েলটি এবং ভার্চুয়ালিটি এক হয়ে যাচ্ছে। এখন যদি আমরা আমাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে হলে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সি, ফিজিক্যাল ইন্টেলিজেন্সি, সোশ্যাল ইন্টেলিজেন্সি, কনটেস্ট ইন্টেলিজেন্সির মতো বিষয়গুলো তাদের মাথায় প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে আমরা সবাইকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে পারব। তবে ভবিষ্যতে কী কী কাজ তৈরি হবে সেটা অজানা। এই অজানা ভবিষ্যতের জন্য প্রজন্মকে তৈরি করতে আমরা আমাদের কয়েকটা বিষয়ে কাজ পারি। সভ্যতা পরিবর্তনের শক্তিশালী উপাদান হলো তথ্য। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ তার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে উদগ্রীব ছিল। কাগজ ও কালির আবিষ্কার এবং পরবর্তীতে ছাপাখানার উদ্ভব মানুষের তথ্য বিস্তারের আকাঙক্ষাকে বাস্তবে রূপায়িত করে। তবে মানুষের তথ্য প্রসারের তীব্র বাসনাকে গতিময়তা দেয় টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বেতার, টেলিভিশন এসবের আবিষ্কার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে কম্পিউটার ও পরবর্তীতে তারবিহীন নানা প্রযুক্তি তথ্য সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিপ্লবের সূচনা করে। আজকের এই ডট কমের যুগে আক্ষরিক অর্থেই সারা বিশ্ব একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ এ পরিণত হয়েছে। আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তাই দিন বদলের হাতিয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাপী আদৃত হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিগত আলোড়ন সর্বত্র বিরাজমান।

এ বিপ্লব চিন্তার জগতে, পণ্য উৎপাদনে ও সেবা প্রদানে বিশাল পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। মানুষের জীবনধারা ও পৃথিবীর গতি-প্রকৃতি ব্যাপকভাবে বদলে দিচ্ছে। জৈবিক, পার্থিব ও ডিজিটাল জগতের মধ্যেকার পার্থক্যের দেয়ালে চির ধরিয়েছে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, থ্রিডি প্রিন্টিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য প্রযুক্তি মিলেই এ বিপ্লব। এ বিপ্লবের ব্যাপকতা, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিকতা ও এ সংশ্লিষ্ট জটিল ব্যবস্থা বিশ্বের সরকারগুলোর সক্ষমতাকে বড় ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীনও করেছে। বিশেষত যখন তাবৎ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজির আলোকে ‘কাউকে পিছিয়ে ফেলে না রেখে’ সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। টেকসই উন্নয়ন, বৈষম্য হ্রাস, নিরাপদ কর্ম এবং দায়িত্বশীল ভোগ ও উৎপাদন এসডিজি বাস্তবায়ন ও অর্জনের মূল চ্যালেঞ্জ।

ডিজিটাল বিপ্লব ‘সবার জন্য অবারিত সুযোগ তৈরি’র আশা জাগিয়েই চলছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কর্মঘণ্টা হ্রাস এ প্রযুক্তির সহজাত সক্ষমতা। এ বিপ্লব কম কর্মঘণ্টা হ্রাসকে মানুষের স্বাধীনতা ও আত্ম-পূর্ণতা পূরণের সোপান হিসেবেই দেখছে। অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ঘাটতির কারণে বিশ্বেও অনেক মানুষ চাকরি
জনগণের তথা করদাতাদের অর্থায়নে এ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সম্ভবপর হয়েছে। বৃহৎ কোম্পানিগুলো মূলত সরকারি অর্থায়নে আবিষ্কৃত প্রযুক্তিগুলোকে নিজেদের করায়ত্ত করে একচেটিয়া বাজার তৈরি করছে। এতে করে যা ছিল সরকারি অর্থায়নে সৃষ্ট গণপণ্য, এখন তা হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য।

দ্বিতীয়ত, এ বৃহৎ কোম্পানিগুলো ব্যাপক মুনাফা করছে। এই হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি সামান্য সংখ্যক বেতনভুক্ত কর্মচারী নিয়োগ করে। যাদের এ প্রযুক্তির ব্যবহারকারী বলা হয়, তারাই অধিকাংশ এ প্রযুক্তি উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু তাদের মজুরি দিতে হয় না; বরং তারা ভোক্তা বা ক্রেতা হিসেবে এ বাজারে নিয়োজিত। ডিজিটাল বাজারকে ভোক্তাদের জাগতিক কল্যাণের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু বহু গবেষণায় অসংখ্য তথ্য ও উপাত্ত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, যে ভোক্তাদের কোম্পানির তুলনায় অসম্পূর্ণ তথ্য থাকায়, অসম ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় এবং মায়জাল ও প্রতারণার সাহায্যে মনস্তাত্ত্বিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে পদ্ধতিগতভাবে শোষণ ও প্রান্তিকীকরণ করা হয়। ডিজিটাল বাজারগুলো ন্যায়ভিত্তিক হওয়ার পরিবর্তে অজ্ঞ গ্রাহকদের বোকা বানাচ্ছে। এ জাতীয় বাজারব্যবস্থা যদি সর্বস্তরে নিয়ন্ত্রিত না হয়, তবে প্রান্তিক ভোক্তাদের স্বাধীনতা এবং আত্ম-পূর্ণতার সুযোগ দেয়ার পরিবর্তে শোষণ ও নিপীড়নের সুযোগ তৈরি করে দেবে।

ই-প্রস্তুতি, ই-সাক্ষরতা ও ই-দক্ষতা একটি ডিজিটাল সমাজের জন্য মৌলিক শর্ত। ই-প্রস্তুতি একজন নাগরিককে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সম্পূর্ণরূপে অংশ নেয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর আশা জাগায়। চিহ্নিত চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন কৌশলে নির্ধারণ করে প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন ও বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতার বিকাশ ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন। শ্রমবাজারে ক্রমবর্ধমান নতুন প্রবেশকারীদের তুলনায় কর্মসংস্থান বাড়ছে না। প্রতি বছর ২.২% হারে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বাড়ে এবং শ্রমবাজারে ২০ লাখ কর্মক্ষম নতুন মানুষ প্রবেশ করে। এর মধ্যে ১০ লাখের কর্মসংস্থান হয়। আর বাকি ১০ লাখ চাকরি পায় না।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের মাত্র ০.৩% কর্মসংস্থান হয়েছে। নতুন করে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিপুলসংখ্যক দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ও জোগানের বিষয়টি আলোচিত হয়। এ দেশে মেধাবী, দক্ষ ও সম্ভাবনাময় তরুণ রয়েছে। কিন্তু এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন অনুযায়ী গুণগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন। ব্যক্তি নিজে চাইলেই দক্ষতা বাড়াতে পারে না।

বরং দক্ষতা বাড়াতে প্রয়োজন হয় গুণগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের। এ প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু হতে হয়। তারপর মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী এবং উচ্চশিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে পরিণত হয়। এ ক্ষেত্রে কর্মক্ষম জনশক্তির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য গুণগত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। প্রয়োজন সরকারি বিনিয়োগ ও ব্যক্তি খাতের পৃষ্ঠপোষকতা।

প্রত্যাশা করা হয়, যদি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তোলা যায় তবে পোশাক শিল্প খাতের রফতানিকেও অতিক্রম করে একটি বহুমুখী রফতানিনির্ভর অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে। বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার রফতানি আয়। অর্থাৎ এ খাত থেকে ৪০ গুণের বেশি রফতানি আয় হতে পারে। অধিকাংশ আইটি ফার্মগুলো ছোট আকারের এবং কিছু আন্তর্জাতিক ফার্ম সীমিত পরিসরে এখানে আছে। প্রত্যাশা করা যায়- যদি প্রয়োজনমতো অবকাঠামো, আর্থিক প্রণোদনা এবং যোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা যায়। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশর মতো উন্নয়শীল দেশে অবকাঠামো একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন অ্যানালাইটিক্স, নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট ও স্মার্ট ডিভাইস উন্নয়ন বাধার মুখে পড়ছে দুর্বল অবকাঠামোর কারণে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন দুর্বলতা এখনও প্রকট। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের তথ্যমতে, বর্তমানে ই-কমার্সের ১০০০টি সাইট রয়েছে এবং ফেসবুকে মোট ৮০০০টি পেজ রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সেবা ও আর্থিক লেনদেন অনলাইনে করছে। তা ছাড়া মোবাইলে আর্থিক সেবা আদান-প্রদানকে সহজ করেছে। কিন্তু এখনও চার কোটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে মাত্র ৮৩ লাখ ডেবিট কার্ড ব্যবহার হয়। আর ইন্টারনেট ব্যাংক সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা মাত্র ১৫ লাখ। বর্তমানে বিগডাটা নিয়ে অনেক হইচই হচ্ছে বিগডাটা গণদ্রব্য বা পাবলিক গুডস। জনসাধারণের সৃষ্ট সম্পদ। জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করে যাতে কেউ একচেটিয়া ব্যবসা না করতে পারে, তা নিয়ে কার্যকরী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন। ব্লকচেইনকে বিপুল সম্ভাবনার বিকেন্দ্রীকৃত, বিতরণযোগ্য এবং জনসাধারণের প্রযুক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কোনো মাধ্যম ব্যবহার না করে ভোক্তাকে সরাসরি সেবা প্রদান করা যায় ব্লকচেইন ব্যবহার করে। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে খরচ বেশি পড়ছে। যেমন ব্যাংকগুলো অনেক ক্ষেত্রেই কম খরচে সর্বশেষ পর্যায়ের ভোক্তাকে সেবা প্রদান করে আসছে। নিয়ন্ত্রণমূলক তদারকির অভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে কারসাজি করে অস্থিরতা সৃষ্টির উদাহরণ রয়েছে। ব্লকচেইন ব্যবহারে প্রচুর পরিমাণে কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। ফলে অতিরিক্ত মাত্রার জীবাশ্ম জ্বালানির দরকার পড়ে। এতে করে চলমান জলবায়ু সংকটকে প্রকটতর করতে পারে, যা টেকসই উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তা ছাড়া বৃহৎ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে আয়কর নিবাসী না হওয়ায় এবং সঠিক ধরনের করারোপ না করায় সরকার বিপুল রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও এসব কোম্পানিগুলো উন্নয়নশীল দেশে বিপুল পরিমাণ ব্যবসা করছে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো ও মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, শিল্প-শিক্ষার সমন্বয়সহ এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।

চতুর্থ শিল্প বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়নসহ সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং আমাদের শিল্প খাতে এ বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান খুবই জরুরি।
২০০৮ সালে বাংলাদেশে ৮ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো, যেখানে ৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হতো— তবে বর্তমানে দেশে ২১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে এবং এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাড়াতো হতে পারে।

ক্রেতার কাছে সরাসরি বিক্রয় বা ই-কমার্স সূচক ২০২০-এর তালিকা প্রকাশ করে সংস্থাটি। এতে দেখা যায়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের র‍্যাঙ্কিং ছিল ১০৩। সেখানে মহামারির বছর ২০২০ সালে এসে হয়েছে ১১৫। সূচক হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩ পয়েন্ট। ২০১৯ সালের তুলনায় কমেছে ৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট। এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ই-কমার্স র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়েছে। ২০২০ সালে তালিকার ৭১ নম্বরে উঠে এসেছে দেশটি। ২০১৯ সালে তারা ৭৫ নম্বরে ছিল।

অন্তর্ভুক্তিমূলক ই-কমার্স ইকোসিস্টেম তৈরিতে সম্প্রতি দারাজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের অর্থনীতিতে ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধির ভূমিকা, এ খাতের ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় নানা বিষয়, কার্যক্রম প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ডেলিভারিসহ সর্বক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্সের নিশ্চয়তা, গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা, নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ই-কমার্স খাতের ভূমিকা, তরুণদের কর্মসংস্থান ও তাদের সঠিক দক্ষতার উন্নয়ন, শিল্প খাতের স্বচ্ছতা প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তরব ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধিতে ই-কমার্স ইকোসিস্টেম-বান্ধব নীতিমালা প্রয়োজন। নীতিমালায় তিনটি বিষয় থাকা উচিৎ যথা- গ্রাহক সুবিধা বিবেচনায় সহজে বাস্তবায়নযোগ্য প্রক্রিয়া, আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্স ও আমদানি-রফতানি নীতিমালায় এর অন্তর্ভুক্তি সংশ্নিষ্ট বিষয় এবং অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। ই-কমার্স খাতে আমাদের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।

আইসিটির বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি, যেমন—অনলাইন সেবা প্ল্যাটফর্ম, ভার্চুয়াল মিটিং বা ট্রেনিং প্ল্যাটফর্ম জুম, মাইক্রোসফট মিটিং, গুগল মিট ইত্যাদি, মোবাইল অ্যাপস, সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, অগমেনটেড রিয়ালিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডাটা এনালিটিকস, সিমুলেশন গেমস, রোবটিকস, আইওটি ইত্যাদি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী কৃষিক্ষেত্রে সাফল্যের অনেক উদাহরণ আছে এবং ভবিষ্যতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।

 

লেখক: রিসার্চ ফেলো, বিএনএনআরসি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here