গাজীপুরের জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার ১৮২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

ahsanullahএই মামলায় গত ১৫ জুন হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ। এই রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হলেও বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১১ আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।

আপিলের রায়ে নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ২৮ আসামির মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১১ জন খালাস পেয়েছেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর একজন পলাতক থাকায় তার ব্যাপারে কোনো রায় দেয়নি আদালত। এছাড়া বাকি দু’জন বিচার চলাকালে মারা যাওয়ায় তাদের আপিল নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু (পলাতক), হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরুর।

মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদ আলী, আনোয়ার হোসেন আনু, জাহাঙ্গীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর (পিতা আবুল কাশেম), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, আবু সালাম ওরফে সালাম ও সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু, মশিউর রহমান মশু। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান আমির হোসেন, বড় জাহাঙ্গীরের পিতা নূর হোসেন, ফয়সাল, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির, খোকন ও দুলাল মিয়া। বিচার চলাকালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছোট রতন ও আল আমিন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের নুরুল আমিনের দণ্ড বহাল রয়েছে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনিরকে খালাস দেন হাইকোর্ট। আর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তওহিদুল ইসলাম টিপু পলাতক থাকায় আপিল করেননি।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীতে এক জনসভায় দুইবারের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই সঙ্গে খুন হন ওমর ফারুক রতন নামে আরেকজন। এলাকায় জনপ্রিয় আহসান উল্লাহ মাস্টার জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন।

ওই ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here