ছাদেকুল ইসলাম রুবেল।
গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার চতুরঙ্গ মোড়ে অবস্থিত ‘ঢাকা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড তেহেরী ঘর। হোটেলের আড়ালে জাল টাকার ব্যবসা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই হোটেল মালিক। হোটেল মালিক তয়কা গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে কাওছার আলীর নামে রংপুরের তারাগঞ্জ থানায় জাল টাকার মামলাও আছে। ওই মামলার পলাতক আসামি তিনি।
বরিশালের মুলাদী থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মুলাদী থানায় কাওছার আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবে দীর্ঘদিন থেকে তিনি এলাকাতেও নেই। কি কারণে এলাকা ছেড়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্রমতে, কাওছার আলী একজন জাল টাকার ব্যবসায়ী। জাল টাকাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকায় নিজ এলাকা থেকে বিতাড়িত হন তিনি। পরে ঢাকার আদাবরের ১৩ নম্বর রোডের ৫৭ নম্বর বাসায় ভাড়া থেকে পুরোদমে শুরু করেন জাল টাকার ব্যবসা।
রংপুরের তারাগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ জানান, কাওছার আলী জাল টাকার ব্যবসায়ী। ঢাকার আদাবর এলাকায় থাকাকালে তাকে ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শায় জাল টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়।
রংপুর জেলা জজ আদালতের দায়রা সহকারী আজিজার রহমান জানান, কাওছার জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এবং মামলাটি ২য় জেলা যুগ্ম জজ ও দায়রা আদালতে বিচারের জন্যে পাঠান।
সূত্রমতে, এ কারণে কাওছার প্রায় বছর খানেক আগে স্থান পরিবর্তন করে আশ্রয় নেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায়। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। গোবিন্দগঞ্জ থানার চতুরঙ্গ মোড়ে ‘হাজী বিরানি হাউজ’ নামে একটি খাবারের দোকান দেন। প্রথম দিকে বিরানি হাউজটি ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই কাওছার এ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা থেকে সরে গিয়ে ‘ঢাকা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড তেহেরী ঘর’ নামে থানা চতুরঙ্গ মোড়ের উত্তরে মহাসড়ক সংলগ্ন পূর্ব পাশে একটি হোটেল দেন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, কাওছার আলীকে ৭ আগস্ট রাত ৯টার দিকে জাল টাকাসহ স্থানীয় লোকজন আটক করে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জ থানা পুলিশে দেয়। পরে গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই ইদ্রিস আলীর সাফাইয়ে তাকে পীরগঞ্জ থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কাওছার আলী জাল টাকার ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেও পুলিশের হাতে জাল টাকাসহ গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দী থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, ওই মামলায় প্রায় ২ বছর আগে অন্তর্র্বতীকালীন জামিনে আসার পর আর আদালতে হাজিরা দেননি তিনি।
আদালতে হাজিরা না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা যাবে ঢাকার আদাবর থানায় অথবা বরিশালের মুলাদীতে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সবদিক থেকে নিরাপদ হওয়ায় এখান থেকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না।‘
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানান, কাওছার আলীর বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় কোনো মামলা নেই। দেশের অন্যান্য থানায় দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে কি না তাও তার জানা নেই। নতুন করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে জাল টাকাসহ হাতেনাতে ধরা না পড়া না পর্যন্ত তাদের কিছুই করার নেই।