ঢাকা: একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আল-বদর বাহিনীর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে আগামী রোববার রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল। তারা দুইজনই পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুন ১১টি অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ২ মে দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু তারা দুজন বিদেশে অবস্থান করায় তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপরও তারা হাজির না হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতেই পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরু করা হয়।
অন্যান্য মামলাগুলোর তুলনায় এই মামলাটির বিচার কাজ দ্রুত শেষ হয়েছে। মাত্র ৫ মাসেই শেষ হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগের এই মামলাটি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল-২ এ তার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়।
আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত দুই আইনজীবী আব্দুস শুক্কুর খান ও সালমা হাই টুনি যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের ভাগ্নি মাসুদা বানু রত্না।
পরে পর্যায়ক্রমে সাক্ষ্য দেন শহীদ মুনীর চৌধুরী, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন, অধ্যাপক সিরাজুল হক খান, সাংবাদিক সিরাজ ঊদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ডা. আব্দুল আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর সন্তানরা, সাংবাদিক আ ন ম গোলাম মোস্তফার ছেলে ও ভাই, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সার, চিকিৎসক মোহাম্মদ মর্তুজার স্ত্রীর ভাই ওমর হায়াৎ, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের বোন ফরিদা বানু, রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে বেঁচে আসা একমাত্র ব্যক্তি দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ফেনীর বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা শরীয়ত উল্লাহ বাঙালি এবং একাত্তরে আশরাফুজ্জামানের ভাড়া বাসার মালিকের ছেলে আলী সাজ্জাদ।
এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া আরো চারজন সাক্ষীর জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এরা হলেন- স্বাধীনতার পরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তকারী তৎকালীন এনএসআই কর্মকর্তা সামাদ তালুকদার, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়ার চৌধুরীর ছেলে তাসলিম হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর ছেলে মিশুক মুনীর ও ফেনীর বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ।
পাশাপাশি আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর ও মো. আতাউর রহমান সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য দেয়ার পরে প্রত্যেক সাক্ষীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।