ডেস্ক রিপোর্ট::  দুর্দান্ত একটি সময় পার করছে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। কাতারের বিশ্বকাপ মঞ্চে তারা ছিনিয়ে এনেছেন বহুল কাঙ্ক্ষিত সোনালী ট্রফি। যার রেশ ধরে এখনও লিওনেল মেসিরা দারুণ উচ্ছ্বাসে মেতে আছেন। এরকম রোমাঞ্চকর মুহূর্তেও তাতে বাগড়া দিতে বসেছে এক নেতিবাচক খবর। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দলের এক সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গঞ্জালো মন্তিয়েলের বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগ ইতোমধ্যে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে ফুটবল বিশ্বে।

সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলের নান্দনিক সৌন্দর্য ম্লান করে দিচ্ছে তারকা ফুটবলারদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড। একের পর এক যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের দায়ে খবরের শিরোনাম হচ্ছেন ফুটবলাররা। প্রথমে অভিযোগ ওঠে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানি আলভেজের বিরুদ্ধে। চলমান সেই মামলায় তিনি বর্তমানে স্পেনের একটি কারাগারে রয়েছেন। এরপর মরক্কোর তারকা ফুটবলারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ফ্রান্সে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত কার্যক্রম। এবার এক নারী মডেলের আইনজীবী আর্জেন্টাইন ফুটবলার মন্তিয়েলের বিরুদ্ধে তার জন্মদিনে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মার্কা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সম্প্রতি স্থানীয় রেডিও টেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ করেছেন আইনজীবী রাকুয়েল হার্মিদা। তবে নিপীড়নের সেই ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ঘটেছিল ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি। সেদিন ছিল মন্তিয়েলের জন্মদিন। সেই উপলক্ষ্যে তিনি বাড়িতে বিশেষ পার্টির আয়োজন করেছিলেন। সেখানেই একদল লোকের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন ওই নারী।

ভুক্তভোগীর আইনজীবী হার্মিদা জানান, ‘ওই নারীর সঙ্গে মন্তিয়েলের অল্প সময়ের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে মন্তিয়েল সেই নারীকে বাসায় নিয়ে এসেছিলেন এবং লা মাতানজায় অনুষ্ঠিত পার্টিতেও নিয়ে যান। ঘটনার শিকার সেই নারী পেশায় একজন মডেল এবং মদ্যপান করেন না। কিন্তু পার্টিতে দুবার মদ্যপানের পর তিনি চেতনা হারান। এরপর সেই নারীকে মন্তিয়েলের বাসার বাইরে ছুড়ে ফেলা হয় এবং ঠিক কতজন লোক মিলে তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন সেটি তিনি জানেন না। তবে মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি যৌন নির্যাতন।‘

হার্মিদার দাবি, পার্টি থেকে ওই নারী কীভাবে বাসায় পৌঁছেছেন সেটিও তিনি জানেন না। পরে এই বিষয়ে ওই মডেল কথা বলতে গেলে তাকে মন্তিয়েল ও তার মা হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারী নারী বুয়েনস আয়ার্সের লা মাতানজা অঞ্চলে থাকেন, সেখানেই এরকম ভয়াবহ ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

একইসঙ্গে অভিযোগ করার আগে সেই নারী কেন এতদিন সময় নিলেন, এমন প্রশ্নেরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন হার্মিদা। তার দাবি, ঘটনার শিকার ওই মডেল মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন। একটু ধাতস্থ হয়ে ওঠার পর লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন, এই সময়ে সে আইনজীবী খুঁজেছে। আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে করোনা মহামারির সময়।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচেও খেলেছিলেন মন্তিয়েল। সেখানে কুরাসাওকে ৭-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেওয়ার ম্যাচে তিনি শেষ গোলটি করেছিলেন। তবে শুধু এসব ম্যাচই নয়, মন্তিয়েলের আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার বেশ ভালো। কোপা আমেরিকা ২০২১, ফিনালিসিমা ২০২২ এবং কাতার ২০২২ বিশ্বকাপেও তিনি রেখেছেন কার্যকরী ভূমিকা। অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে আলবিসেলেস্তাদের জিতে নেওয়া তিনটি শিরোপাতেই তিনি ছিলেন।

তবে তার সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি। টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচের শেষ পেনাল্টি শট নেওয়ার গুরু দায়িত্বটা ছিল মন্তিয়েলে কাঁধে। তিনি ঠাণ্ডা মাথায় সেটি জালে জড়িয়ে নিশ্চিত করেছিলেন আর্জেন্টিনার তৃতীয় শিরোপা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here