dffgsdfgdfgষ্টাফ রিপোর্টার :: আদর্শগত মতপার্থক্যের কারণেই লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে একাধিক খুনি জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে শাহবাগ থানায় অজ্ঞাত জঙ্গিদের আসামি করে মামলা করেছেন ব্লগার অভিজিত রায়ের বাবা অজয় রায়।

এদিকে, অজয় রায়কে সান্ত্বনা জানাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ছুটে যান বিশিষ্ট নাগরিকরা। এ সময় তারা বলেন, অভিজিতকে হত্যার দায় এড়াতে পারে না পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলের কাছে উপস্থিত তাদের সদস্যদের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সকাল সোয়া নয়টার দিকে শাহবাগ থানায় অজ্ঞাত জঙ্গীদের অভিযুক্ত করে মামলা করেন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়। পরে মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন দেশের সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক।

অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘প্রগতিশীল মানুষদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। পুলিশ চাইলে অভিজিতের হত্যাকারীদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না।’

মামলার পরপরই পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান সুপরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের সাথে দু’য়ের অধিক খুনি জড়িত।

রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শিবলী নোমান জানান, ‘টুইটারে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের সংগঠন এ হত্যার দায় স্বীকার করে পোস্ট দিয়েছে। হত্যার মোটিভ পূর্বের ব্লগার রাজিব ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে হত্যার সাথে মিল আছে।’

অধ্যাপক অজয় রায়কে সান্ত্বনা জানাতে মর্গে ছুটে যান দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা অভিজিতের লাশ নেয়ার বিষয়েও খোজ খবর নেন। এসময় তারা অভিজিতের খুন হওয়ার জন্য অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ এবং ব্লগার রাজিবের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়াকে দায়ী করেন।

বিশিষ্ট নাগরিক শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘পুলিশের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

অন্যদিকে মুনতাসির মামুন বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে অনেকের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’

বিশিষ্ট নাগরিক শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী জানান,’হুমায়ুন আজাদের হত্যার বিচার হলে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না।’

এদিকে সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কৃষ্ণ পদ রায় জানান মামলার তদন্ত করবে ডিবি পুলিশ। তিনি আরো জানান, পুলিশের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘এ হত্যার পিছনে কারা আছে তা তদন্ত করে বের করা হবে।’

দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর জখম অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন বন্যা এখন আশংকা মুক্ত হলেও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে অভিজিৎ রায় স্ত্রীকে নিয়ে বই মেলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বসে ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে তাকে ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অভিজিৎ মারা যান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here