আব্দুল কাদের জিলানী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় যাবতীয় আনন্দ-উৎসব উপভোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ জেলার মানুষ। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকেল বেলা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় বিনোদনের অভাবে অবসর সময় কাটানো অথবা স্থানীয় বড় মাঠে আড্ডা দিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে হয় শহরের ও দূর থেকে ঈদ করতে আসা মানুষদের। এক কথায় বলা যেতে পারে ঠাকুরগাঁও শহরের মানুষের বিনোদন স্থানীয় বড় মাঠেই সীমাবদ্ধ।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও বড় মাঠের সৌন্দর্য ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
এখন বাইরে থেকে দেখতে মাঠটি অনেক সুন্দর লাগছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। অপরদিকে অনেকে অভিযোগ করেছেন প্রাচীর নির্মাণের ফলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিনোদন প্রেমী দর্শনার্থীরা।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও বড় মাঠ এখন ক্রাইমজনে পরিণত হয়েছে। মাঠের ভেতরে চার পাশে হাঁটার রাস্তার পাশে প্রতিদিন সকাল-বিকেলে শিক্ষার্থী, প্রেমিক যুগল ও বিভিন্ন মানুষকে বসে থাকতে দেখা যায়। একটি চক্র দিনে-দুপুরে প্রেমিক যুগল ও অসহায় ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল ফোন, ম্যানি ব্যাগসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই চলে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্ম।
গত বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ একদল সাদা পোশাকধারী পুলিশ বড় মাঠে ঢুকে সাধারণ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে খারাপ ভাষায় গালি দিয়ে তল্লাশি শুরু করেন। পুলিশের খারাপ ব্যবহারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়েছেন তৌফিক রহমান তাসভি নামে এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
রাফাত ইসতিয়াক রাশিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বড় মাঠ আমাদের ঠাকুরগাঁও শহরের মানুষের প্রাণ। কিন্তু এখন আমাদের এই বড় মাঠের প্রাণ হারিয়ে যাচ্ছে। একটি চক্র বড় মাঠে আড্ডা দিতে আসা লোকদের মোবাইল, টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে সন্ধ্যার পরে কতিপয় সাদা পোশাকধারী পুলিশ সাধারণ মানুষকে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন জানান, নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য বড় মাঠে এখনো কাজ চলছে। যদি কোনো ব্যক্তি বা চক্র বিনোদন নিতে আসা সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানান, বড় মাঠে সাধারণ মানুষকে একটি চক্র হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য বড় মাঠটিকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে।