শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসিকে অবশ্যই মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী তাদের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের দেশে নিরাপদে ফেরত নিয়ে যায়।স্টাফ রিপোর্টার :: বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলন শুরু হয়েছে।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেম-এ শনিবার সকাল ১০টায় এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সিএফএম এর বিদায়ী সভাপতি আইভরিকোস্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কেল এমন এতে সভাপতিত্ব করছেন। অনুষ্ঠানে সিএফএম এর সভাপতির দায়িত্ব বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ এ আল ওতাইমিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখবেন।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ অব্যাহত রাখতে মুসলিম দেশগুলোর জোট ইসলামী সম্মেলন সংস্থা-ওআইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মিয়ানমারে জাতিগত নির্মূলের শিকার রোহিঙ্গাদের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওআইসিকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসিকে অবশ্যই মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী তাদের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের দেশে নিরাপদে ফেরত নিয়ে যায়।

এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুটি বিশেষ প্রাধান্য পাবে। সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে আগত অর্ধশতাধিক দেশের প্রতিনিধি শুক্রবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।

ওআইসিভুক্ত ৫৭টি দেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। এবারের সিএফএম সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় হল- ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নের জন্য ইসলামী মূল্যবোধ’। ওআইসির সদস্য সকল রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসি প্রতিষ্ঠানসমূহ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী।

ঢাকায় সিএফএম এ মূলত মুসলিম বিশ্বের সংঘাত ও চ্যালেঞ্জসমূহ, আন্তর্জাতিক ইস্যু, দেশে দেশে মুসলমানরা যে ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে কীভাবে সেগুলোর সমাধান, মুসলিম উম্মাহর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিষয়সহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্র খুঁজে বের করা হবে।

শনিবার দুপুর ও বিকেলে সিএফএম এর দুইটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় বিদেশি প্রতিনিধিরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সাথে সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন। রোববার সকালে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বিশেষ কর্মঅধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকেলে ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ২৫ বছর পর ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের আয়োজন করছে। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন এরশাদ সরকারের সময়ে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৪তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here