স্টাফ রিপোর্টার :: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু (৬৬)।
সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
বাদ আসর খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে সাদেক বাচ্চুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারণে তাকে এফডিসিতে নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু।
শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি ছিল করোনা উপসর্গও। ১১ সেপ্টেম্বর তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত দু’দিন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
সাদেক বাচ্চু পাঁচ দশকের দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে মঞ্চ, বেতার, টিভি ও সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। এক হাজারেরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’। নব্বই দশকে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ সিনেমায় অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তা পান খলনায়ক হিসেবে। এ পরিচয়েই দেশজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে গুণী এ অভিনেতার।
তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না, জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার, জীবন নদীর তীরে, তোমার মাঝে আমি, ঢাকা টু বোম্বে, ভালোবাসা জিন্দাবাদ, এক জবান, আমার স্বপ্ন আমার সংসার, মন বসে না পড়ার টেবিলে, বধূবরণ, ময়দান, আমার প্রাণের স্বামী, আনন্দ অশ্রু, প্রিয়জন ও সুজন সখী। নায়ক আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান সাদেক বাচ্চু।
মহিউদ্দিন বাহার অনেক দিন ধরে হার্ট ও কিডনিসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দয়াগঞ্জের বাসা থেকে ইব্রাহিম ডায়াবেটিক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। আজ বাদ আসর দয়াগঞ্জে জানাজার পর সেখানকার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মহিউদ্দিন বাহার ১৯৪৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলজীবন থেকেই অভিনয় ছিল তার নেশা। কৈশোরেই একাধিক নাট্য সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। অভিনয় দিয়ে মনোযোগ কেড়েছিলেন মঞ্চ থেকেই। সেই সুবাদে ১৯৭৬ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। পরের বছর বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিশুতোষ অনুষ্ঠান ‘রোজ রোজ’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে টিভি নাটকে পদার্পণ করেন। এরপর নিয়মিত কাজ করেছেন।
তবে তিনি বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন হানিফ সংকেত পরিচালিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে। টানা ২৬ বছর এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের নাটিকাগুলোয় নিয়মিত অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় ছিল তার আজীবনের নেশা। যেজন্য সরকারি চাকরি করার পরও অভিনয়ের জন্য আলাদা করে সময় বের করে নিতেন। কর্মজীবনে মহিউদ্দিন বাহার ছিলেন সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব। এই পদে থেকেই ২০০৫ সালে অবসর নেন তিনি। দর্শক সাড়া জাগানো এই অভিনেতার মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।