এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় (২০১৫ সালে) ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি (অর্থ) আদায়কারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে সন্তোষজনক জবাব না পেলে প্রধান শিক্ষকের এমপিও স্থগিতসহ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রণালয়টি।
গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ পেয়ে আজ (মঙ্গলবার) থেকে শিক্ষা বোর্ডগুলো অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সালমা জাহান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ১০টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানো নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে সেসব প্রতিষ্ঠান বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৩৬ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই যেসব প্রতিষ্ঠান টাকা ফেরত দেয়নি এবং কোনো জবাবও প্রদান করেনি হাইকোর্টের আদেশ ও প্রবিধানমালা অনুযায়ী গভর্নিং বডি কেন ভেঙে দেয়া হবে না অবিলম্বে তার কারণ দর্শিয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের সারাদেশে এসএসসির ফরম পূরণে বাড়তি অর্থ আদায়কারী তিন হাজার ১৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়। এর মধ্যে কেবল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডেরই প্রায় ৯শ’ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে গত ৭ ফেব্রুয়ারির (রোববাার) মধ্যে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিয়ে বোর্ডগুলোকে অবহিত করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষা বোর্ডগুলো তিন ধরনের স্কুলের সন্ধান পায়। কিছু প্রতিষ্ঠান বোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে- তারা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে। আবার কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে জানান, তারা অতিরিক্ত অর্থ নেয়নি। তবে প্রায় এক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনাকে আমলেই নেয়নি।
এদিকে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতি অর্থাৎ ২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শুরুতে অতিরিক্ত সেশন চার্জ ও টিউশন ফি আদায় করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেয়ার আল্টিমেটাম গত ৭ ফেব্রুয়ারি (রোববার) শেষ হয়েছে। কিন্তু ঢাকার মাত্র দুটি স্কুল টাকা সমন্বয় করবে বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ডকে। কয়েকটি স্কুল অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেছে। কিছু স্কুল আল্টিমেটামের পরে বোর্ডকে জানিয়েছে, টাকা সমন্বয় করবে। এজন্য অতিরিক্ত টিউশন ফি নেয়া স্কুলগুলোর তালিকা চূড়ান্ত করতে পারছে না মন্ত্রণালয়। তবে এসব স্কুলের সংখ্যা সারাদেশে সহস্রাধিক বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, “অতিরিক্ত টাকা আদায় করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনানুসারে আমরা শোকজ করব। এরপর স্কুলগুলোর পাঠানো জবাব মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”