ঢাকা: আবারও হরতাল আহ্বানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮ দলীয় জোট।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আগামী ৪ থেকে ৬ নভেম্বর টানা হরতাল আহ্বান করা হবে বলে জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বুধবার রাত ৯টা ৪০ থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত এ বৈঠক করেন ১৮ দলীয় জোট নেতারা।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ৪ থেকে ৬ নভেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশের রাজপথ, রেলপথ ও নৌ-পথ অবরোধের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে জানা যায়।

এছাড়া ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সারাদেশে সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৭ নভেম্বরের এ কর্মসূচির পর অবরোধ ও অসহযোগের মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বৈঠকে জোট নেতারা বেগম জিয়াকে জানান, এখনই চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার সময়। তাই ৭ নভেম্বরের পর পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য জোট নেত্রীকে তারা দায়িত্ব দেন।

বৈঠকে সবাই বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি থেকে না সরার অনুরোধ জানান। তারা আরও জানান, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হলে ভালো, না হলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করতে হবে।

সংলাপের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে জোট নেতারা জানান, জোট মনে করে সরকার আলোচনায় যেতে চায় না। তারা যদি সংলাপের বিষয়ে আন্তরিক হতো তবে পাখির মতো গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করতো না। তারপরও যদি সরকার আলোচনা করতে চায় তাহলে তাদের পক্ষ থেকেই আবারও প্রস্তাব দিতে হবে। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়েই আলোচনা করতে হবে। এছাড়া আগ বাড়িয়ে বিএনপিকে আলোচনায় যাওয়া ঠিক হবে না।

এদিকে জোটের বৈঠকের আগে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) শীর্ষ নেতারা। তারা তখন বেগম জিয়াকে জামায়াতের সংশ্রব ছাড়ার আহ্বান জানান।

কিন্তু ১৮ দলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে কোনো আলোচনায় হয়নি।

তবে বৈঠকে উপস্থিত জোটের এক নেতা বলেন, যেখানে বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে সেখানে ওই দলটিকে ত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। এটা বৈঠকে আলোচনা করারও কিছু নেই।

এদিকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য আবদুল হালিম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, খেলাফত মজলিস সভাপতি মওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপি চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপ সভাপতি জেবেল রহমান গাণি, ইসলামিক পার্টির এমএ মবিন, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, মুসলিম লীগের কামরুজ্জামান খসরু, জমিয়তে ওলামা ইসলামের মুফতি মো. ওয়াক্কাস, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here