লক্ষ্মীপুরে রোববার জামায়াত-বিএনপির সাথে পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত আবুল কাসেমকে (৫২) এবার নিজেদের দলীয় ইউনিয়ন নেতা দাবি করল আ’লীগ। নিহত আবুল কাশেমকে বিএনপি কর্তৃক তাদের কর্মী বলে দাবি করার ঘৃন্য অপচেষ্টার দাবিতে সোমবার বিকেলে স্থানীয় দৈনিক মেঘনার পাড় পত্রিকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

 লিখিত বক্তব্যে তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি  মোঃ বোরহান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএনপি- জামায়াত ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহত আবুল কাশেম তেওয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ঘটনার দিন বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর কৃষি ব্যাংকে সয়াবিন চাষের জন্য কৃষি ঋণ উত্তোলন করতে গেলে শহরের দক্ষিণ স্টেশনে হামলার শিকার হন। গুলিবিদ্ধ আবুল কাশেম আহতাবস্থায় তাদেরকে জানিয়েছিলেন বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যস্থলে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। অথচ বিএনপি আবুল কাশেমকে নিজেদের দলীয় কর্মী বলে যে ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় বিএনপি কর্মী বলে যে সংবাদ পরিবেশন হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ইবনে হোসেন ভুলু, তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্থানীয় ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রমূখ।

 এদিকে ঘটনার পর আহত আবুল কাশেমকে হাসপাতালে ভর্তি এবং অবস্থার অবনতিতে ঢাকায় স্থানান্তরসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমে দীর্ঘ সময় আ’লীগের তৎপরতা না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা আ’লীগ সভাপতি এম আলাউদ্দিন সমকালকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি এলাকার বাইরে ছিলেন। এসময় তিনি তার বাইরে জেলা আ’লীগের বর্তমান দুরবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেন।

 অপরদিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান জানান, নিহত আবুল কাশেম বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা তেওয়ারিগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। বিএনপির গণমিছিলেই অংশগ্রহণ করতে এসে পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তিতে বিএনপির তত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আওয়ামীলীগই লাশের রাজনীতি করে।

 প্রসঙ্গত, রোববার সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধদের মধ্যে আবুল কাশেমকে দুপুর ১টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে তাঁকে ঢাকায় প্রেরণের নির্দেশ দেয় কর্তব্যরত চিকিৎসক। খবর পেয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান হাসপাতালে গিয়ে ঢাকায় পাঠানোর উদ্যোগ নেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। হাসপাতালের এম্বুল্যান্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিলস্নার লাকসামে পৌঁছলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আবুল কাশেম।

নিহত আবুল কাশেম ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ের জনক ছিলেন। নিহত আবুল কাশেমের ছেলে ইসমাইল হোসেন জানান, তার বাবা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা মানেই নিরীহ লোকের জানমালের ওপর হামলা, প্রাণহানি।  রোববার লক্ষ্মীপুর শহরের দক্ষিণ তেমুহনীতে বিএনপি-জামাতের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন মারা গেছেন। যাদের একজন চরমনসা গ্রামের আবুল কাশেম। লাশ নিয়ে রাজনীতির পুরানো রাজনীতির অংশ হিসাবে বিএনপির দাবি আবুল কাশেম ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন দাবি করা হয়।

 ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/মিজানুর রহমান মানিক/লক্ষীপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here