স্টাফ রিপোর্টার :: রাজধানীর ৭১ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে ধূমপান করা হয়। আর এক-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে সরাসরি ধূমপান করতে দেখা গেছে। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এক জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।

হার্ট ফাউন্ডেশনের অ্যান্টি-টোব্যাকো প্রোগ্রামের কর্মকর্তা ডা. আহমাদ খাইরুল আবরার সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, ‘ঢাকার ৫১ হাসপাতালে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। জরিপে ঢাকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের প্রমাণ হিসেবে পানের পিক, চুনের দাগ পাওয়া গেছে। আর সরাসরি ধোঁয়াযুক্ত তামাক ব্যবহার করতে দেখা গেছে প্রায় অর্ধেক হাসপাতালে।’

ডা. আহমাদ খাইরুল আবরার আরও বলেন, ঢাকার ৮০ শতাংশ সরকারি হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত পণ্য বিক্রি হয়। এমনকি ১৮ শতাংশ হাসপাতালের সীমানার মধ্যেই এসব দোকান স্থাপন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি। দেশের সব হাসপাতালে আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ তামাকবিরোধী সাইনেজ স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে হাসপাতালের একশ’ মিটারের মধ্যে তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। ডা. মিল্লাত তামাক কর কাঠামো সংস্কার ও কর বাড়াতে একশ’ এমপিকে নিয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন।

হাসপাতালগুলোকে তামাকমুক্ত রাখতে কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া জরুরি বলে মনে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত; দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগী ও দর্শনার্থী হাসপাতালে ভিড় করেন। এ ছাড়া চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে অবস্থান করেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার কমাতে এবং রোগী ও অন্যদের ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে হাসপাতালকে তামাকমুক্ত রাখা জরুরি।

তারা আরও বলেন, তামাকজাত দ্রব্য শুধু সেবনকারীকেই নয়; আশপাশের মানুষকেও সমান ক্ষতি করে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা, স্ট্রোক ও প্রজনন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং ধূমপান থেকে বিরত থাকতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা ফেরদৌস, ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী, জাতীয় যক্ষ্ণা নিরোধ সমিতির সভাপতি মোজাফফর হোসেন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here