অভিযোগ দাখিল পদ্ধতি সঠিক না হওয়ায় আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে গোলাম আযমের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, দুই বছর সময় নিয়ে প্রসিকিউশন অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে। কিন্তু অভিযোগ দাখিলের পদ্ধতি সঠিক ও আইনসম্মত না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ গ্রহণ না হওয়ায় বুঝা যায় যে, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ, প্রসিকিউশন সুনির্দিষ্টভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি।’
প্রসিকিউশনের পক্ষে গোলাম আরিফ টিপু বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু, সুবিন্যস্ত না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে আবারো অভিযোগ দাখিলে নির্দেশ দিয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার শাহিনুর ইসলাম বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট দলিলাদি ও ম্যাটেরিয়াল দাখিল করেছে।
তিনি বলেন, এসব তথ্য পর্যালোচনা করে মামলার অপরাধ আমলে নেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের কথা ছিল। কিন্তু, তা যথাযথ নিয়মে সুবিন্যস্ত না হওয়ায় পুনরায় ৫ জানুয়ারি অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ফিরিয়ে দিয়েছে। বিধিমালার ৪৬(এ) ধারার ক্ষমতা বলে ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই অভিযোগ ফেরত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপক্ষ ১২ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করে। ১৩ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের জন্য ২৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করে।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী ৫২টি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনীর সংগঠক, উৎসাহদাতা, নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
এরআগে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা গত ৩১ অক্টোবর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুঙ্গিক নথিপত্র রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের কাছে জমা দেয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ মার্চ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সিনিয়র নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এমপি ও সাবেক বিএনপি নেতা আবদুল আলীমকেও যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তবে আলীম শর্তসাপেক্ষে জামিনে আছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা