মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া প্রতিনিধি :: দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে আলোয় অবশেষে ফিরেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আলো (ছদ্মনাম)। ভন্ড ফকিরের নির্যাতনের শিকার হয়ে এ শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে আলোয় ফিরিয়ে এনেছেন কলাপাড়ার মহিলা ক্লাব ও নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
টানা ৪৫ দিন পর দুঃস্বপ্ন মুক্ত হলো আলো ও তার পরিবার। আবার সে স্কুলে যাবে এ খবর শুনে চোখ ছলছল আলো তার চোখের জল ফেলেই সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। সেই সাথে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন তার স্বপ্ন ভঙ্গকারী ভন্ড ফকির নুরুজ্জামান ও তার সহযোগী আলমগীর শাস্তি পাবে তো।
বুধবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম সাদিকুর রহমান ও মহিলা ক্লাবের সভাপতি মোসাম্মৎ রোজিনা আখতার বানু বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের টিফিনের টাকার একটি অংশ, মহিলা ক্লাব এবং ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আলোর হাতে পড়াশোনার খরচের জন্য ২২ হাজার পাঁচশ টাকা তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার, মহিলা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া নাসরিন, নারী নেত্রী নমিতা দত্ত, কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, শিক্ষক শায়লা পারভিন এবং শিক্ষার্থীর মা আয়ফুল বেগম প্রমুখ।
কলাপাড়ার খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মংগলসুখ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মহিলা ক্লাবসহ নারী নেতৃবৃন্দ অসহায় নির্যাতিতা এ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেন।
উল্লেখ্য অসুস্থ্য শয্যাশায়ী বাবার ঝাড়ফুক পানি পড়া দিয়ে চিকিৎসার নামে উপজেলার মেহেরপুর গ্রামের এ পরিবারের সবাইকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে গত ৮ ও ১১ এপ্রিল ভন্ড ফকির নুরুজ্জামান অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ ১৭ এপ্রিল ভন্ড ফকির নুরুজ্জামান ও তার সহযোগী আলমগীরকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে। পুলিশ জানায়, এ মামলার চার্জশীট দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ঘটনার পর উপার্জনহীন সংসারে আলোর পরিবারের খাদ্য সংকট দেখা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় তার লেখাপড়া। পরিবারের এ বেহাল দশা দেখে এগিয়ে আসলেন কলাপাড়ার নারী নেতৃবৃন্দ। বর্তমানে আলো ও তার গোটা পরিবারের নিরাপত্তাসহ আরও আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।