ডেস্ক রিপোর্টঃঃ  এবার সরকারি অফিসে বসে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিজেপি বিধায়কের ছেলে। শুধু তাই নয়, ছেলের গ্রেপ্তারির পর বিধায়কের অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গেছে ‘টাকার পাহাড়’। বিজেপি শাসিত কর্ণাটকের এ ঘটনা সামনে আসতেই পুরো ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে অফিস ও বাড়ির দুই জায়গায় হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে মোট ৮ কোটি টাকা। এ ঘটনার পর থেকেই উধাও বিধায়ক মাদাল বিরূপাক্ষাপ্পা। এদিন সকালে বিপাকে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তিনি ইস্তফাও দিয়েছেন।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ভারতের দেবনগরী জেলার চান্নাগিরি আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন মাদাল বিরূপাক্ষাপ্পা। মাইসোর স্যান্ডাল সাবানের জন্য বিখ্যাত সরকারি সংস্থা কর্ণাটক সোপস অ্যান্ড ডিটারজেন্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যানও তিনি। তার ছেলে প্রশান্ত মাদাল কর্ণাটক অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসেসের ২০০৮ ব্যাচের অফিসার। বর্তমানে সরকারি সংস্থা ব্যাঙ্গালোর ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ বোর্ডের (বিডব্লুএসএসবি) মুখ্য হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, সরকারি বরাত পাইয়ে দিতে বাবার নাম বিক্রি করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরেই তৎপর হয়েছিল কর্ণাটক লোকায়ুক্তের দুর্নীতি দমন শাখা। বৃহস্পতিবার তাদের পাতা ফাঁদে পা দেন প্রশান্ত। দপ্তরে বসে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময়ই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বেশি রাত পর্যন্ত বিধায়কের অফিস ও বাড়িতে চলে তল্লাশি। অফিস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১.৭ কোটি টাকা। বাড়িতে পাওয়া যায় আরও ৬ কোটি টাকা।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল, সাবান ও ডিটারজেন্টের কাঁচামাল কিনতে বিধায়ক পুত্র এক ঠিকাদারের কাছে ৮১ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। ঘুষের প্রথম কিস্তি হিসেবে ৪০ লাখ টাকা নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান প্রশান্ত। পরে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় কোটি কোটি টাকা। এ ঘটনায় টাকা-ভর্তি তিনটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। যার তদন্তটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে অফিস ও বাড়ি থেকে ‘টাকার পাহাড়’ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন বিরূপাক্ষাপ্পা। আদালতে আগাম জামিনের আবেদন পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু চাপ বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে চিঠি লিখে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন তিনি। চিঠিতে তর সাফাই, ‘আমার পরিবারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই অবশ্য বিড়ম্বনা ঢাকতে নিশানা করেছেন বিরোধীদল কংগ্রেসকেই। তিনি বলেন, কংগ্রেস সরকারের আমলে লোকায়ুক্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। দুর্নীতি মোকাবিলায় আমরাই নতুন করে লোকায়ুক্ত গঠন করি। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—এ ঘটনায় স্বাধীনভাবে তদন্তের কাজ চলবে।

এ ঘটনায় কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার তোপ দেগেছেন, ৪০ শতাংশ কাটমানি সরকারের লুট অব্যাহত। বাবা চেয়ারম্যান, ছেলে টাকা তুলছেন! বিজেপিতে দুর্নীতির আরামদায়ক আঁতাত চলছে!

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here