আগামী শিক্ষবর্ষে বিদ্যালয়গুলোয় বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ সম্পর্কে সরকারি ঘোষণা ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায়। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় পাঠ্যবই পৌঁছানোর কথা থাকলেও এ পর্যন্ত রাঙামাটি জেলায় সিকিভাগ বইও পৌঁছেনি। জুলাই মাসেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা সংস্থাগুলোর চুক্তি মোতাবেক ২০১২ সালের এবতেদায়ী, দাখিল, মাধ্যমিক ও এসএসসি (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষর্থীদের পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনা সংস্থাগুলো নিজেরাই প্রত্যেক উপজেলায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বই পৌঁছে দেবে। কিন্তু রাঙামাটি জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৯ নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী এবতেদায়ী, দাখিল, মাধ্যমিক ও এসএসসি (ভোকেশনাল) এর বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৫,৫৪,৮০৬ কপি এবং প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ১,৪৭,০৬০। যা মোট বইয়ের ২৭%।
শিক্ষা অফিসের হিসাব অনুযায়ী, রাঙামাটি সদরে এবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৪০০০ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্র্র্রেণী (দাখিল)পর্যন্ত বরাদ্দ ১৫৪০ প্রাপ্তি ২৭০ কপি। প্রাপ্তির হার ১৭.৫৩%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্র্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ১,২১,০৫০ এবং প্রাপ্তি ৩৭,২৬০ কপি। প্রাপ্তির হার ৩০.৭৮%। এস এস সি(ভোকেশনাল) জেলা শিক্ষা অফিসের বরাদ্দ ৫৮৮৯ এবং প্রাপ্তি ৭,৩৯০কপি। বরকল উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৯২৬ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ১৩৪০্ত প্রাপ্তি ৩৩০ কপি। প্রাপ্তির হার ২৪.৬২%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ২৬৮৮৬ এবং প্রাপ্তি ৬৫১৭ কপি। প্রাপ্তির হার ২৪.২৩%। জুরাছড়ি উপজেলায় এবতেদায়ী ও দাখিলের জন্যও কোন বই বরাদ্দ নেই। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী (মাধ্যমিক)পর্যন্ত বরাদ্দ ২১,১৬৩ এবং প্রাপ্তি ৪৭৭০। প্রাপ্তির হার ২২.৫৩%। বিলাইছড়ি উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ১৩০০ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী (দাখিল) জন্যও কোন বই বরাদ্দ নেই। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ১২,৫৬০ এবং প্রাপ্তি ২৭৯০ কপি। প্রাপ্তির হার ২২.২১%। কাপ্তাই উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৫২৫০ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ৩৯৬৫ এবং প্রাপ্তি ৮৭৫ কপি। প্রাপ্তির হার ২২.০৬%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ৫৮,৮০৪ এবং প্রাপ্তি ১৮২৪৬ কপি। প্রাপ্তির হার ৩১.০২%। রাজস্থলী উপজেলায় এবতেদায়ী ও দাখিল পর্যায়ে কোন বইয়ের বরাদ্দ নেই। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ২৪৫৭৫ এবং প্রাপ্তি ৬৭৫৮ কপি। প্রাপ্তির হার ২৭.৪৯%। কাউখালী উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৫৭৯০ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ৬৬০০ এবং প্রাপ্তি ১৫২০ কপি। প্রাপ্তির হার ২৩.০৩%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ৪৯,৩৫০ এবং প্রাপ্তি ১৫৫৫৯ কপি। প্রাপ্তির হার ৩১.৫২%। নানিয়ারচর উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ১৬১৫ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ২৫৮০ এবং প্রাপ্তি ২৯০ কপি। প্রাপ্তির হার ১১.২৪%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ৪১,৪১০ এবং প্রাপ্তি ১২,৮৫০ কপি। প্রাপ্তির হার ৩১.০৩%। লংগদু উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৯৯৫৫ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ৬৪৫৮ এবং প্রাপ্তি ৭৬০ কপি। প্রাপ্তির হার ১১.৭৬%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ৫৮,৬২০ এবং প্রাপ্তি ১১,৯৯৫ কপি। প্রাপ্তির হার ২০.৪৬%। বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবতেদায়ী ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের চাহিদা ৭৫৫৫ থাকলেও এখনো একটি বইও হাতে এসে পৌঁছেনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(দাখিল) পর্যন্ত বরাদ্দ ৩৬৪৫ এবং প্রাপ্তি ৪৩০ কপি। প্রাপ্তির হার ১১.৭৯%। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী(মাধ্যমিক) পর্যন্ত বরাদ্দ ৭৩,৯৮০ এবং প্রাপ্তি ১৮,৪৫০ কপি। প্রাপ্তির হার ২৪.৯৩%।
তবে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ফজলুর রহমান জানিয়েছেন বইয়ের প্রাপ্তি এখনো সন্তোষজনক না হলেও এ মাসের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সকল উপজেলায় পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে যাবে। তিনি আরো জানান, প্রতি সপ্তাহেই আমাদের অফিসে পাঠ্যপুস্তক আসছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যে হারে বই আসছে তাতে ১ জানুয়ারী ছাত্রছাত্রীদের হাতে বই তুলে দিতে সমস্যা হবে না।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আলমগীর মানিক/রাঙ্গামাটি