ষ্টাফ রিপোর্টার :: অবশেষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি।

আজ শনিবার সকালে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ২২ শর্তে আগামীকাল রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সামাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। সমাবেশ বিকেল ৫টায় শেষ করার কথা বলা হয়েছে।’

‘সমাবেশের শর্তের মধ্যে আরো রয়েছে- মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা যাবে না, দুই ঘণ্টা সভাস্থলে লোক সমাগমের কথাও বলা হয়েছে’, যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি এবং নেতাকর্মীদের ‘গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তারের’ প্রতিবাদে বিএনপি এই সমাবেশের ডাক দেয়। প্রথমে ২৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) এই সমাবেশ করার কথা ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। পরে তা পিছিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এ দিন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল মহানগর নাট্যমঞ্চে সভা ডাকায় বিএনপিকে একদিন পিছিয়ে সমাবেশ করার পরামর্শ দেওয়া হয় ডিএমপির পক্ষ থেকে।

বারবার সমাবেশের তারিখ পেছানোর ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘(ডিএমপি) বলেছে ২৭ তারিখেরটা ২৯ তারিখে দিতে, আমরা সেটাও করেছি। তো, আমরা এবার চাই যে উনারা (ডিএমপি), উনাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ তারিখে আমরা বলেছি। সেটা না হলে ৩০ তারিখ উনারা যদি দেন সেটা করতেও… আমাদের জনসভা করতে কোনো অসুবিধা নেই। আমরা সেটা সাফল্যমণ্ডিত করব।’

এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি। সমাবেশের জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে-

  • আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জনস্বার্থ, রাষ্ট্র ও জননিরাপত্তাবিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না।
  • উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
  • ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
  • নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত কল্পে পর্যাপ্ত নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
  • স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশে গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং জনসভায় আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিহিক্যাল স্ক্যানার/সার্চ মিররের মাধ্যমে জনসভাস্থলে আগত সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • অনুমোদিত স্থানের বাইরে সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।
  • অনুমোদিত স্থানের বাইরে সমাবেশস্থলের বাইরে প্রজেকশন ব্যবহার করা যাবে না।
  • অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাটে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
  • আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীর সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
  • অনুমোদিত সমাবেশ ব্যতিত মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
  • জনসভা শুরু দুই (২) ঘণ্টা পূর্বে লোকজন সভাস্থলে আসতে পারবে।
  • ১৭.০০ (বিকেলে ৫টা) ঘটিকার মধ্যে জনসভার যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
  • অনুমোদিত সময়ের পূর্বে কিংবা পরে অনুমোদতি স্থানের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
  • কোনো ধরনের লাঠিসোটা/ব্যনার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।
  • মিছিল সহকারে জনসভাস্থলে আসা যাবে না।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here