লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাটে জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট এলাকার সড়কের বেহাল অবস্থা অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতেই ডুবে যায় ফেরিঘাটটি। এতে করে মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট হয়ে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ২১ জেলার মানুষ যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

যাত্রবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাককে দীর্ঘদিন থেকে এই দুর্ভোগ পোহাতে হলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। আসছে ঈদু উল আজহার আগে সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী না করলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে এরুটে যাতায়াত করা ২১ জেলার মানুষকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট সড়কটির বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট হয়ে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ২১ জেলার মানুষ যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল দশার কারণে ওই পথের হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়ছে।

অভিযোগ রয়েছে, ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বালু ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত বালুবাহী ট্রাকের চাপে রাস্তার এই বেহাল দশা হয়েছে। প্রতিদিন ঘাটের ওই রাস্তার ওপর ট্রাক রেখে বালু ভর্তি করা হয়। এ সময় এ রুটে চলাচলকারী শত-শত যানবাহন আটকা পড়ে। সময় মতো ফেরিতে উঠতে না পারায় বাস যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে এবং পণ্যবাহী ট্রাকের কাঁচামাল পচে নষ্ট হয়ে যায়। বালু বহনকারী ট্রাকের চাপে একটু বৃষ্টিতেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাটি।

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে গেছে। কোথাও কোথাও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এতে বাড়ছে ঝুঁকি। এমন পরিসি’তিতে সড়কটি দ্রুত সংস্কার না করলে আসন্ন কোরবানীর ঈদে জনসাধারণের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।

এছাড়া ফেরিঘাটটি সামান্য বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতেই ডুবে যায়। ঘাট এলাকা আড়াই থেকে তিন ফুট পানিতে ডুবে থাকায় বাস-ট্রাকসহ শত শত যানবাহনকে ফেরি পারাপারে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এতে যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে পড়ে। যে কারণে ঘাটের প্রবেশ পথে বাস-ট্রাক আটকা পড়ে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।

জানা গেছে, পারাপারের জন্য লো-ওয়াটার, হাই ওয়াটার ও মিড ওয়াটার লেভেলের তিনটি ঘাট থাকার কথা থাকলেও ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ পথের মজু চৌধুরীরহাটে মাত্র একটি মিড ওয়াটার লেভেলের ঘাট নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এখানকার মিড ওয়াটার লেভেল ঘাটটি এখন লো ওয়াটার ঘাটে পরিণত হয়েছে। যে কারণে সামান্য জোয়ারেই ডুবে যায়। এতে করে দু’পাড়ের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। নদীতে ভাটা পড়ে পানি কমলে পরিসি’তি স্বাভাবিক হয়।

লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাটে ভোলাগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ইউসুফ ও বাস চালক খোকন বলেন, ফেরির অপেক্ষায় পল্টুুনে উঠতে লাইনে দাঁড়াতে হয় গাড়ি নিয়ে। এরই মাঝে জোয়ার কিংবা বৃষ্টি হলে আর পিছনে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। ওই সময় পানির চাপ বেশি থাকলে ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যাত্রীরা জানান, ঘাটে জোয়ারের পানি জমে থাকলে তারা ফেরিতে উঠতে পারেন না। ভাটার অপেক্ষায় থেকে তাদের দীর্ঘ সময় ঘাটেই কেটে যায়।

এদিকে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ শাজাহান আলি মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট এলাকায় সড়কটি দেখতে যান। এ সময় লাল পতাকা দিয়ে রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

পরে গত ৪ জুন মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাট সংলগ্ন বালু মহালে অভিযান চালান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলি। এ সময় দু’টি ট্রাক জব্দও দুই চালককে আটক করা হয়। কিন’ এর পরেও বালু ব্যবসাযীরা সড়কের উপর ট্রাক রেখে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরি সার্ভিস রুটের মজুচৌধুরীর হাট ঘাটের সহকারী ব্যবস’াপক সিহাব উদ্দিন বলেন, সড়কটির পাশে বালু মহাল থাকায় রাস্তার এমন বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।

অপর দিকে একাধিক ঘাট না থাকায় সব মৌসুমে একই ঘাট দিয়েই পারাপার হতে হয়। তাই এখানে হাই ওয়াটার লেভেলের একটি ঘাট নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here