আকতার হোসেন অপূর্ব, নাটোর
জমিতে ৬০ হাজার মেট্রিকটন আখ থাকা সত্বেও প্রায় ১৫ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা নিয়ে নির্ধারিত সময়ের ৪৬ দিন আগেই নাটোর চিনি কলের মাড়াই মৌসুম বন্ধ হয়ে গেছে। নাটোর চিনিকল গত বছর একই কারনে লোকসান হয় ১২কোটি ৮৬ লাখ টাকা। অন্য দিকে মিলে অবিক্রিত পড়ে আছে প্রায় ৩৮কোটি টাকার চিনি।
মিল সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে মিলগেটের বাইরে ৫২ টি আখক্রয় কেন্দ্র বন্ধ্য করে দেওয়া হয়েছ্ে । লোকসানের ব্যবধান কমাতে বৃহষ্পতিবার মিলগেটে কোনপ্রকার পূর্জি ছাড়াই চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি আখ কেনা হবে। এতে মিলের উৎপাদন আরও ২/১ দিন চালু থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতে এবারের মতো আখ কেনা শেষ করা হয়েছে।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস’াপনা পরিচালক এ বি এম আরশাদ হোসেন জানান, ১২০ মাড়াই দিবসে এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ১৫ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর নাটোর চিনিকলে উৎপাদন শুরু হয়। ৭৪ দিনে মিলটিতে শতকরা ৬ দশমিক ৭০ ভাগ রিকভারীতে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিকটনের কিছু বেশি চিনি উৎপাদিন হয়েছে। তিনি আরও জানান, বাজারে রিফাইনারী চিনি মিলের চেয়ে কম দামে বিক্রি হওয়ায় প্রায ৩৮ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত পড়ে আছে। এতে মিলের আখচাষীদের পাওনা ৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
চিনিকলের চেয়ে প্রতিমন আখ ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাম বেশি দেওয়ায় অখচাষীরা চিনিকলে আখ সরবরাহ না করে ভেজাল গুড় ব্যবসায়ীদের কাছে ভাল মানসম্মত আখ বিক্রি করে আর নিম্নমানের আখ সরবরাহ করে মিলে। এতে মিলে আখ সংকট দেখা দেয়। অন্যদিকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকই পূরন না হওয়ায় প্রায় প্রতিবছর লোকসান গুনতে হচ্ছে মিলটিকে। ফলে মিলের অসি-ত্ব নিয়েই সংকট দেখা দিয়েছে ।
মিলের আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, নাটোর চিনিকল এলাকায় প্রতিদিন ৬৫০ টি বিদ্যুতচালিত নিষিদ্ধ পাওয়ার ক্রাসারে ১৫ থেকে ১৬ শ’ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে গুড় তৈরি হচ্ছে যা মিলের উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে বেশি। নাটোর চিনিকল এলাকায় এবার ২১ হাজার ৫শ’ একর জমিতে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিকটন আখ উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে মিল মাড়াই করেছে সোয়া লাখ মেট্রিক টনের মত আখ। বাঁকী আর সোয়া তিন লাখ মেট্রিকটন আখ ব্যবহার হয়েছে গুড় তৈরিতে।