পুলিশ দম্পতির নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীনগৃহপরিচারিকা শিশু রোমেলা খাতুন (৮) গতকাল বুধবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় গত ১০ নভেম্বর তাকে চিকিৎসার জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

বুধবার দুপুর একটার দিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর রোমেলার চাচা আজিজুল খাঁ, ভাই আলিম খাঁ ও ভাবী মালা খাতুন রোমেলাকে বাড়িতে নিয়ে যান।

পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ রিয়াজুল হক রেজা জানান, ‘রোমেলা এখন শারীরিকভাবে সুস্থ্য। হাঁটা-চলাও স্বাভাবিকভাবে করতে পারছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

রোমেলার চাচা আজিজুল খাঁ জানান, ‘মেয়েটার শরীর কিছুটা সুস্থ্য হয়েছে। তবে তার শরীর  দুর্রবল রয়েছে। এখন আমরা এসআই শাহেদ ও তার স্ত্রী সুইটি খাতুনকে গ্রেপ্তার ও তাদের শাসিত্ম দেখার অপেক্ষায় আছি।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে রোমেলা খাতুন জানায়, আগের চেয়ে অনেকটা ভালো আছি। হাঁটতে গিয়ে পায়ের গিরার মধ্যে একটু ব্যথা করে। রোমেলা বলেন, আমাকে যারা নির্যাতন করেছে, আমি তাদের শাসিত্ম চাই। আমি আর কিছুই চাইনা।

গত মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে রোমেলা খাতুন। এর আগে গত ১৪ নভেম্বর মামলার তদনত্মকারী কর্মকর্তা চট্রগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিজন কুমার বড়ুয়া পাবনায় এসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোমেলার ১৬১ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করেছেন।

প্রসঙ্গত: পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার গোটেংরা গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের শিশুকন্যা রোমেলা খাতুন (৮) কে বেড়া উপজেলার নান্দিয়ারা গ্রামের ছেলে এবং চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহেদ আলী প্রায় নয় মাস আগে গৃহকর্মী হিসেবে সীতাকুন্ডুতে নিয়ে যান । সেখানে কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন।

কোরবানী ঈদে এসআই শাহেদ আলী পাবনায় নিজ বাড়ীতে বেড়াতে আসলে রোমেলা’র পিতা ইয়াজ উদ্দিন সেখানে গিয়ে অসুস্থ্য শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

গত ১২ নভেম্বর চট্রগ্রামের সীতাকুন্ড থানায় রোমেলার বাবা ইয়াজ উদ্দিন বাদি হয়ে এসআই শাহেদ ও তার স্ত্রী সুইটি খাতুনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই চট্রগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়’র এক অফিস আদেশে সীতাকুন্ড থানার এসআই শাহেদ আলী কে সাময়িকভাবে বরখাসত্ম ও তার স্ত্রী সুইটি খাতুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পাশাপাশি মামলার তদনত্ম ভার দেয়া হয় চট্রগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিজন বড়ুয়াকে। বর্তমানে ওই এসআই দম্পতি পলাতক রয়েছেন।

চট্রগ্রাম সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরে আলম মীনা জানান, বর্তমানে এসআই শাহেদ ও তার স্ত্রী সুইটি খাতুন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কলিট তালুকদার/পাবনা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here