হাইকোর্টের নির্দেশে গাজীপুরের গৃহবধূ ও উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত জাহান মেঘনার লাশ পুন:ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে উঠানো হয়েছে। গাজীপুরের মেজিষ্ট্রেট কামরুন্নাহারের উপস্থিতে ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা সদরের সাতাইশ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে মেঘনার লাশ উঠনো হয়। এ সময় তার মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। লাশ উঠানোর সময় এলাকার অসংখ্য উৎসুক মানুষ ভিড় জমায়। হাইকোর্ট একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে পুন: ময়না তদন্ত দ্রুত সমপন্ন এবং প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে মেঘনার লাশ কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই অতিসত্বর কবর থেকে তুলে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
উলেস্নখ্য, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মেঘনা ৫ জানুয়ারি শ্বশুর বাড়িতে মারা যান। পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। ময়না তদন্তে বলা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মেঘনার পরিবারের অভিযোগ ছিল, নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের প্রভাবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনও সঠিকভাবে করা হয়নি, তাই পুন:ময়না তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নিহতের মা ফুলবানু। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গাজীপুরের সিভিল সার্জনসহ দুই চিকিতসককে তলব করলে গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুল্লাহ এবং লাশের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মো. লিয়াকত আলী হাইকোর্টে হাজিরা দেন। তাঁরা আদালতে জানান, লাশের শরীরে যে চিহ্ন ছিলো তাতে মনে হয়েছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অপরদিকে হাইকোর্টের প্রশ্নের জবাবে নিহতের মা ফুলবানু বলেন, যারা লাশ গোছল করিয়েছেন তারাই বলেছেন, মেঘনার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। এছাড়া মেঘনার শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবি করা হতো। যৌতুক না পেয়েই তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না ।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাজী মোসাদ্দেক হোসেন/গাজীপুর