স্টাফ রিপোর্টার :: ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের কুলখানি শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশিষ্টজন অংশ নেন।

গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে (আজাদ মসজিদ) বাদ আসর এ উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্যার আবেদের আত্মীয়স্বজন, শুভানুধ্যায়ী ও পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। ব্র্যাকের বিপুলসংখ্যক কর্মীও এতে উপস্থিত ছিলেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে স্যার আবেদের জামাতা তার স্মৃতিচারণ করে সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। কুলখানিতে একমাত্র বক্তা ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য রহমত উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক নুরুল ফজল বুলবুলসহ মরহুমের আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা।

সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ফজলে হাসান আবেদ দেশে-বিদেশে এত যশ, সম্মান, স্বীকৃতি-পুরস্কার পেয়েও অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। তার বড় অবদান হচ্ছে, একটি জনহিতকর প্রতিষ্ঠান চালু করার পর সেটাকে এগিয়ে নিতে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। গ্রামীণ নারীদের তিনি গাভি প্রতিপালনে উদ্বুদ্ধ করেন। পরে আবার সেই গাভির দুধ বিক্রি করতে আরেকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার গড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই জনকল্যাণে নিবেদিত।

আনিসুজ্জামান বলেন, এক জীবনে ফজলে হাসান আবেদ যা অর্জন করেছেন, তা বলে শেষ করার মতো নয়। ১৯৭২ সালে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের প্রত্যন্ত এক গ্রামে তার কাজের যাত্রা শুরু করেছিলেন। পরে তা এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। আজ তা পৃথিবীর অন্যতম অগ্রসর একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় পরিণত হয়েছে। এর পেছনে ছিল ফজলে হাসান আবেদের কর্মপ্রচেষ্টা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও পরিশ্রম। আজ তিনি চলে গেছেন। তার দেখানো পথেই আমরা মানুষের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, তার প্রয়াণ বাংলাদেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। অবহেলিত মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও স্বাবলম্বিতা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী তার অবদানই তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।

পরিবারের পক্ষে মরহুমের জামাতা ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘স্যার ফজলে হাসান আবেদ সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। পরিবারের সদস্য বা সহকর্মী সকলের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, ব্যক্তি সমস্যাকেও তিনি গুরুত্ব দিতেন, সমাধানের চেষ্টা করতেন। দেশের বাইরে গেলে অনেক ব্যস্ততার মাঝেও পরিচিতজনের সাক্ষাতের জন্য সময় বের করে নিতেন। বক্তৃতা বা নীতিবাক্য দিয়ে নয়, কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি সবাইকে সঠিক পথটি দেখাতেন। আজীবন তিনি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের কথা চিন্তা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here