মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ::
তীব্রশীতে খুলনার পাইকগাছা সহ উপকূলীয় ছিন্নমূল মানুষরা। তাছাড়া স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েক দিন অধিকাংশ সময় তীব্রশীত ও ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে প্রকৃতী। হীমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় কাবু করছে প্রাণীকূল। ক্রমাগত শীত জেকে বসেছে প্রকৃতি। ফলে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে প্রাণীকূল। রাত থেকে ঘন কুয়াশায় প্রকৃতি ঢাকা পড়ছে।
অধিকবেলা পর্যন্ত যেন ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। কুয়াশার চাদর ভেদ করে অল্প সময় দেখা মিলছে সূর্য্যরে আলো। সকাল ১১ টার পর সূর্য্যরে ক্ষিণ আলো প্রকৃতির উপর আচড়ে পড়তে শুরু করে। ঘন কুয়াশার কারনে শ্রমজীবি মানুষের প্রতিদিনের কাজকর্ম কিছুটা দেরি হচ্ছে। এতে করে শ্রমজীবি মানুষের কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় আয় কম হচ্ছে। তাতে সংসার চালাতে হীমশিম খাছেন। শৈত প্রবাহের বিশেষ করে দরিদ্র ও শ্রমজীবি মানুষ বেশি দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন। আর শীতের বেলা ছোট হওয়ায় শ্রমজীবি মানুষ কাজ করে এগোতে পারছেন না। সে কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে তীব্র কুয়াশার পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও কুয়াশার প্রভাব পড়ছে। পৌষ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে তীব্র শীত আর রাতে কুয়াশার গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে।
বিকালের আলো থাকতেই কুয়াশা শুরু হচ্ছে। রাত বাড়তেই ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে প্রকৃতি। রাত ১১ টার পর থেকে বৃষ্টি
ন্যায় কুয়াশার পানি পড়ছে সকাল পর্যন্ত। ঘন কুয়াশায় রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যানবাহন হেডলাইটৱ চালিয়ে চলাচল করছে। নদীতে ট্রলার নৌকা সহ নৌজাহান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় খেয়া পারাপারে মাঝী বিড়ম্বনার পড়ছে। এতে করে তারা কর্মস্থানে পৌঁছাতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার প্রভাবে শিশু, বৃদ্ধরা স্বর্দি জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের রোগীদের কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়েই
রোগ বালাই বাড়ছে। সকাল-বিকাল বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে তীব্র শীতে উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে। পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প.প. কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদার জানান, শীত ও কুয়াশার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের বের না হওয়া ভাল, গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে এবং ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না। কুয়াশার মধ্যে গরম কাপড় ব্যবহার করে সাবধানে চলাচল করতে হবে।
তীব্র শীত আর কুয়াশার প্রভাবে শাকসবজি সহ কৃষি কাজ কর্মের উপর প্রভাব পড়েছে। কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেত, পান ও বোরো বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। পান গাছ থেকে পানপাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে, এতে করে পান চাষীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘন কুয়াশায় শাকসবজির কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। বোরো ধানের বীজতলার চারা বড় হয়ে যাওয়ায় তেমন একটা ক্ষতির সম্ভবনা নেই। তবে রোপনকৃত বোরো ক্ষেতের চারা সূর্য্যরে আলো ঠিকমত না পাওয়ায় খাদ্য তৈরী করতে পারছে না। এতে করে চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। কৃষকদের তীব্র শীতের মধ্যে বোরো চারা রোপণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। শীত একটু কমলে বোরো আবাদ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার
বিভিন্ন ব্লকে কৃষি অফিসের মাধ্যমে কুয়াশার প্রভাব থেকে সবজি ক্ষেত ও বোরো ক্ষেত কুয়াশার প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।