ঢাকা: বিরোধীদল চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ছেড়ে দিতে রাজি আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবুও যেন তারা নির্বাচনে আসে এ প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনতে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত আছেন উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব চান তা আমি দিতে রাজি আছি। তবুও নির্বাচনে আসেন।
তিনি বলেন, আগেই বলেছি যতগুলো মন্ত্রণালয় চান দিতে রাজি আছি। এখনো বলছি, নাশকতা পরিহার করে নির্বাচনে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনের আগুন মনে রাখুন। সেই আগুনে যানবাহন পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করবেন না। তাহলে আপনিও রক্ষা পাবেন না।
নির্বাচনের তফসিল তাড়াহুড়ো করে ঘোষণা করা হয়েছে- বিভিন্ন মহল ও খোদ জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ তোলা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবারো বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। কেউ নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। দেশবাসীকে বলবো নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন।
ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে বিএনপি সন্ত্রাসী ও বোমাবাজির ট্রেনিং করাচ্ছে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাচ্চাদের দিয়ে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করবেন না। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তারা কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে- এটা আমার প্রশ্ন।
বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন এভাবে পুড়িয়ে মানুষ মারছেন? মানুষ পুড়িয়ে আপনি কি শান্তি পান?’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আন্দোলন করলে রাস্তায় নামেন। আন্দোলন দিয়ে লুকিয়ে থাকবেন না। রাস্তায় নামলেই দেখা হবে কার আন্দোলনে কতো জোর।
যারা সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের ব্যাপারে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোটের অধিকার রক্ষায় দেশের প্রতিটি এলাকায় যুবলীগকে প্রস্তুত থাকতে হবে। মানুষের জানমাল রক্ষায় সবাইকে দেশের মানুষের পাশে থাকতে হবে।
খালেদা জিয়া জনগণের অশান্তিই চায়, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, অশান্তি বেগমের (খালেদা জিয়া) আগুনে দেশের মানুষ পুড়ছে। এই পোড়ানোর খেলা বন্ধ করেন। যদি দেশের মানুষ ক্ষেপে যায় তবে এই পোড়ানোর অশান্তি থেকে আপনি নিজেও রক্ষা পাবেন না।
নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বায়ত্তসাশিত প্রতিষ্ঠান। তাদের কাজে সরকার বাধা সৃষ্টি করেনি আর ভবিষ্যতেও করবে না। বরং নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করা হয়েছে।
এই সরকারের আমলে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আসার পর দেশ জঙ্গিবাদের দুর্নাম থেকে রক্ষা পেয়েছে। বিশ্ব দরবারে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে সমাবেশে ‘শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম’ বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করেন ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
সমাবেশে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুণ চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী।