মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ::
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় উলুডাঙ্গা, রহিমপুর, সনাতনকাটি, হরিদাসকাটি (ইউআরএসএইচ) হাই স্কুলে ৫টি পদে কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও নিয়োগ কমিটি অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ। অভিযোগকারী উপজেলা রহিমপুর গ্রামের আক্কাস গাজীর পুত্র মোক্তার হোসেন প্রতারিত হয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। যার নং সিআর ১২৬৯/২২তারিখ ১০ নভেম্বর ২২, মামলায় উল্লেখ্য যে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ দৈনিক সমকাল পত্রিকায় তার বিদ্যালয়ের জন্য একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, একজন নৈশ প্রহরী, একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী, একজন নিরাপত্তা কর্মী ও একজন আয়া পদে লোক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন।
সে মতে মামলার বাদী মোক্তার হোসেনের কাছে প্রধান শিক্ষক নৈশ প্রহরী পদে চাকুরীর জন্য ১০ লক্ষ টাকা চাহেন। অতঃপর ৭ লক্ষ টাকা চুক্তিতে মোক্তার আলি ধার দেনা করে সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ও পৈত্রিক জমি বিক্রি চুক্তিতে বায়না পত্র করে ৭ লক্ষ টাকা প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস কে। এরপর অন্যান্য পদে একাধিক ব্যক্তি চাকুরীর জন্য আবেদন করেন এবং নৈশ প্রহরী পদেও অন্যান্য প্রার্থীরা আবেদন করেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নিয়োগ কমিটি গত ৫ নভেম্বর ২০২২ ইন্টারভিউ কার্ড
প্রদান করেন। সে মতে ইন্টারভিউ অনুষ্ঠিত হয়। ইন্টারভিউ এর পর প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ কমিটি অভিযোগকারী মোক্তার এর
কাছে তিন লক্ষ টাকা এবং অন্যান্যদের কাছে বিভিন্ন অংকের অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। যারা অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন
তাদের চাকরি হয়েছে মোক্তার টাকা দিতে না পারায় তার চাকরি দেওয়া হয়নি বলে মামলায় উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও নিয়োগ কমিটির লোকজন অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মামলার বাদী মোক্তার কে বাদ দিয়ে অন্যান্য ৫ জনকে চাকুরীতে নিয়োগ দেন। যার মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে
সুকুমার চন্দ্র দাস কে, নৈশ প্রহরী হিসেবে বাদি মোক্তার হোসেনের স্থলে প্রশান্ত কুমার সরকার কে, নিরাপত্তাকর্মী কৃষ্ণ কুমার নন্দী কে, পরিচ্ছন্ন কর্মী শেখ রায়হানকে এবং আয়া হিসেবে রেহানা খাতুনকে নিয়োগ দিয়ে অর্ধ কোটি টাকার উর্দ্ধে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অধিকাংশ সদস্য, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি অভিযোগকারী মোক্তার হোসেনের চাকরি দেওয়ার নামে নেয়া টাকা ফেরত চাহেন ও বিক্ষোভ সৃষ্টি করেন। প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস টাকা ফেরত দিতে চাইয়া বিভিন্ন রকম তাল বাহানা করেন। যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও মানববন্ধন করা হয়।
এতে ফল না পেয়ে মোক্তার হোসেন বিজ্ঞ আদালতে মামলা করে। আদালত মামলাটি পিবিআই খুলনাকে তদন্ত দেন। পিবিআই খুলনা বাদী মোক্তার হোসেনের দখলকৃত কাগজপত্র যার মধ্যে মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড, মানববন্ধনের স্থিরচিত্র, পেপার কাটিং এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে ও পর্যালোচনায় বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে পিবিআই খুলনার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এদিকে মামলার আসামি প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস, সভাপতি সহ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্তরা মোক্তার হোসেনকে মামলার আগামী ধার্য তারিখ ০৮ অক্টোবর ২৩ এর মধ্যে মামলাটি তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ সহ খুন জখমের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন অীভযোগ।
মোক্তার হোসেন প্রশাসনের কাছে সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল পূর্বক পুনরায় ইন্টারভিউ গ্রহণের মাধ্যমে যোগ্য লোক নিয়োগের অনুরোধ সহ তার জান মালের নিরাপত্তা চেয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস মুঠোফোনে রাগতোঃ স্বরে বলেন মামলা হয়েছে আদালতে বিচার হবে তাতে আপনাদের (সাংবাদিক) কি?