মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ  চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার ভোট গ্রহণ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ভোট চলাকালে দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, ককটেল বিষ্ফোরণ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোহন নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধসহ পৃথক সংঘর্ষে অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছেন স্থানীয় দুই সংবাদকর্মী। ভোটারদের জোর পূর্বক নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করায় দুই এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। ব্যালটে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ৮নং কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

এদিকে পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রে মধ্যে ৪টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে পুনঃরায় ভোট গ্রহনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সোনাইমুড়ী পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী মোতাহের হোসেন মানিক।

রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আহত সাংবাদিকরা হচ্ছেন, দৈনিক খবর এর সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি আবু বক্কর ছিদ্দিক ও টুডে বাংলাদেশ এর সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি রায়হান। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, সোনাইমুড়ী উপজেলার বাহারকুট গ্রামের আবদুল হকের ছেলে মোহন (২০)। অপর আহতরা হচ্ছেন, উলুপাড়া গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) ও আমিরাবাদ গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে সালা উদ্দিন (২৯)সহ ৪জন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা জানান, তারা সবাই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের সমর্থক। সকালে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর তারা পৌরসভার ৬নং বাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাশের একটি বাড়ীতে বসে ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল প্রতীকের একদল সমর্থক তাদের ওপর অর্তকিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় ও ককটেলের বিষ্ফোরণ করে। এতে মোহনের পা’সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। হামলার সময় দৌঁড়ে পালাতে গেলে মনির ও সালা উদ্দিনসহ আরও ৪জনকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা।

আহত মনির হোসেন বলেন, কোন প্রকার উষ্কানি ছাড়াই মোবাইল প্রতীকের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মোহন, সালা উদ্দিনসহ আমরা তিন জন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছি। মোহনের অবস্থা আশংকাজনক।

বাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা এসআই রুবেল মিয়া জানান, সকাল থেকে কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। সকালে কেন্দ্রের বাহিরে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি।
অপরদিকে পৌরসভাটির ১নং কৌশল্যারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১১টার দিকে ভোট দিতে আসা কয়েকজন ভোটারকে জোর পূর্বক সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর চশমা প্রতীকে ভোট দিতে বলে দুইজন এজেন্ট। পরে ভোটারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই এজেন্টকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দায়িত্বে থাকা পুলিশের এসআই ফারুক হোসেন।

এদিকে, সকালে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে ৭নং সুফিয়া খাতুন ক্যাডেট স্কুল এন্ড মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দূর্বৃত্তের হামলার শিকার হন সাংবাদিক ছিদ্দিক ও রায়হান। হামলাকারীরা তাদের মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। দুপুর ১টার দিকে ভোটের ব্যালটে অনিয়ম ও জাল ভোটের অভিযোগে ৮নং কাঁঠালিয়া মোহাম্মদীয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেন নির্বাচন কমিশন। ওই কেন্দ্রটির ভোট আর চালু করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা শেখ ফরিদ।

উল্লেখ্য, পৌরসভার মোট ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে রবিবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ চলছে। পৌরসভাটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫হাজার ২৩২জন, যার মধ্যে পুরুষ ১২হাজার ৮৩৬ ও নারী ভোটার রয়েছে ১২হাজার ৩৯৬জন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here