বুড়িশোলের জঙ্গলে ‘গুলিবিদ্ধ’ মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর চিকিৎসা করেছেন সন্দেহে এক হাতুড়ে এবং পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে এক যুবককে মঙ্গলবার গ্রেফতার করল সিআইডি। ভূদেব মাহাতো নামে বছর আটান্নর ওই হাতুড়ের বাড়ি জামবনির বেনাশুলি গ্রামে। আর সুচিত্রাকে পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে ধৃত বছর উনিশের তারাচাঁদ টুডু ওরফে পিন্টুর বাড়ি জামবনিরই উত্তর সরাকাটা গ্রামে। পিন্টুর বাবা লক্ষ্মীরাম টুডু ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতের এনভিএফ কর্মী।
শিলদা-কাণ্ডের পরেও জখম মাওবাদীদের চিকিৎসা করার অভিযোগে ভূদেববাবুকে এক বার ‘আটক’ করেছিল সিআইডি। তবে সে বার তাঁকে ‘গ্রেফতার’ করা হয়নি। সিআইডি সূত্রের দাবি, বেনাশুলি ছাড়া মাওবাদী প্রভাবিত পালইডাঙা গ্রামেও একাধিক বার মাওবাদীদের চিকিৎসা করেছেন ভূদেববাবু। গত বৃহস্পতিবার (কিষেণজি যে দিন নিহত হন) সন্ধ্যায় বুড়িশোলের জঙ্গলে ‘গুলিবিদ্ধ’ সুচিত্রাকে সাইকেলে ওই হাতুড়ের বেনাশুলির বাড়িতে নিয়ে যান পিন্টু। ভূদেববাবু সুচিত্রার পেটে বেঁধা গুলি বার করতে পারেননি। তিনি দু’টি ইঞ্জেকশন দেন। সুচিত্রাকে ফের সাইকেলে চাপিয়ে পিন্টুই চিলকির দিকে পৌঁছে দেন। ‘গুলিবিদ্ধ’ সুচিত্রা রক্তমাখা পোশাক (চুড়িদার) পাল্টে শাড়ি পরে নেন এবং চুড়িদারটি চিলকির জঙ্গলেই পুড়িয়ে ফেলেন। ভূদেব-পিন্টুকে জেরার সূত্র ধরে মঙ্গলবার দুপুরে দগ্ধ চুড়িদারের অংশও উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছে সিআইডি। পিন্টুর সাইকেলটি আটক করা হয়েছে।

সুচিত্রা ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছেন বলে অনুমান সিআইডি-র। তাঁর সঙ্গে একাধিক মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য রয়েছেন বলে ধারণা পুলিশেরও। জামবনি ও বেলপাহাড়ি লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমানায় তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। মাওবাদী নেতা রঞ্জন মুন্ডার স্কোয়াড ও মাওবাদী নেতা আকাশের সন্ধানে সরডিহায় তল্লাশি চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। এ দিন দুপুরে বুড়িশোলের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিজি (সিআইডি) ভি ভি থাম্বি, এডিজি (সিআইডি-১) সি ভি মুরলীধর, কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স-এর এসপি মনোজ বর্মা।
শালবনির হাতিমারা জঙ্গল থেকে এ দিনই একটি ইনস্যাস ও একটি ৯ এমএম পিস্তল উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। ইনস্যাসটি শিলদার ইএফআর ক্যাম্প থেকে মাওবাদীরা লুঠ করেছিল বলে দাবি পুলিশের। পুলিশের বক্তব্য, সাধারণত মাওবাদীদের গুরুত্বপূর্ণ কোনও নেতার কাছেই ইনস্যাসের মতো আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। তাই পুলিশের অনুমান, তেমন মাপের কোনও নেতা ওই জঙ্গলে ছিলেন। তল্লাশির সময়ে পালিয়ে যান। তবে হাতিমারা জঙ্গল ও লাগোয়া এলাকায় আরও তল্লাশি হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তল্লাশি চালানো হয়। কেউ ধরা না পড়লেও দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ডেস্ক রিপোর্ট

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here