ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি রাহিনী বিএসএফের বর্বরতা দিনের পর দিন বেড়ে যাচ্ছে। কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে তারা হিংস্র পশুর মত আচরণ করছে। ভারতীয় রক্ষি বাহিনী বিএসএফ পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে সীমান্ত মানুষদের। এদের গুলি করতে পারলেই তাদের আনন্দ। এর এর সাথে বর্তমানে নতুন করে যোগ হয়েছে বিবন্ত্র করে নির্যাতন। সীমান্তের বাংলাদেশী অভ্যন্তর থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে সীমান্ত পিলার নির্মান করছে। ব্যাটরিয়ন পর্যায়ে বৈঠকের পরও সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে তাদের তুলে দেওয়া ভারতীয় থানায়। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে বিএসএফ সীমান্তে বিএসএফ এত হিংস্র কেন?
ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৩০টি সীমান-বর্তী জেলা রয়েছে। এ সব জেলা দিয়ে দুই দেশের অনেক মানুষের বিনা পাসপোর্টে যাতয়াত রয়েছে। প্রতিদিন দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে পরিবার পরিজন বা নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাচ্ছে। কিন্ত বিএসএফ সীমান্তে যে ভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তাতে সে দেশের সচেতন মহল, মানবধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবিদেরও হতবাগ করেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সীমানে- ৩ জন বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে যায়। ব্যাটলিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে আটককৃতদের হাজির করা হয়্। কিন’ তারপরও আটককৃতদের ফেরত না দিয়ে ভারতীয় থানায় হস্তান্তর করে। আখাউড়া সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত পিলার নির্মান করতে চেষ্টা করে। ৩ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্তে এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করে হত্যা করে বিএসএফ। এ আগে বাংলাদেশের কুমিল্লার একটি সীমান্তে বিনা উষ্কানিতে এক বাংলাদেশীকে যে ভাবে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে তাদের দেশীয় টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজ হতবাক হয়েছে সারা বিশ্ব। সভ্য সমাজের মানবতা যেন ভূলুণ্ঠিত হয়। সভ্যতার পিঠে চরম ছুরিকাঘাত করে বিএসএফ যে উল্লম্ফন করে। বাংলাদেশের নিরীহ নাগরিককে বিবস্ত্র করে যে ভাবে পিঠিয়েছে, সেই ঘটনা গত ৯ ই ডিসেম্বর ২০১১ ঘটনা, অথচ আমাদের সীমান- রক্ষীবাহিনী কিংবা কোন গোয়েন্দা সংস’ার রিপোর্টে কখনো এর কোন ইঙ্গিত দেওয়া হয় নি। ঐ ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ হলে যতটা ভারতে তোড়পাড় হয়েছে বাংলাদেশে তা হয় নি। বাংলাদেশ সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী এটা নিয়ে সরকার ভাবছে না বলে দায় এড়িয়ে যায়। উন্টো চুরি, চোরাচালানের অভিযোগ করা হয়। তাহলে প্রশ্ন হল দায়টা আসলে কার? তাদের বক্তব্য কি উষ্কে দিচ্ছে না বিএসএফকে? পরদিন বেনাপোল সীমান্তে আবারো নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয় এক বাংলাদেশীকে। কিন্ত তথাকথিত গরু চুরির ঘটনায়, সন্দেহ বশত অত্যন্ত অমানবিক পৈশাচিকভাবে হাত-পা বেধে বিবস্ত্র করে গোপনাঙ্গে পেট্রল ঢেলে অতি আদিম কায়দায় পেঠানোর ভিডিও প্রকাশের নিমিত্তে হতবাক হয়ে যাই, ভেবে অবাক হই বিএসএফ এর মতো একটি সুশৃংখল আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা কি করে এতো জঘন্য জংলী-জানোয়ারের মতো আচরণ করতে পারলো ? সমস্ত সভ্যতাকে বৃদ্ধাআঙ্গুলি দেখিয়ে কি করে সাধারণ নিরীহ নাগরিকের সাথে এমন আচরণ কি করে করতে পারলো? ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে কি মানবিক গুণাবলী একে বারেই লোপ পেয়েছে? বড় অবাক হই, এই কি আমাদের সভ্যতা, এই কি আমাদের মানবিকতা! একজন নিরীহ নাগরিককে নিরেট সন্দেহে ৮, ৮ জন জোয়ান মিলে হাত পা বেধে জংলী কায়দায় পেঠাতে হবে, তারপর ঐ দৃশ্য আবার ভিডিওতে ধারণ করে প্রচার করে নিজেদের বাহবা নিতে হবে।
বিএসএফ বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও নির্মম ভাবে হত্যা করছে নিরহী বাংলাদেশীদের। বার-বার প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিনা উস্কানীতে নিরীহ জনগণকে এই রকম নির্মমভাবে হত্যা করবে, নির্যাতন করবে, ধরে নিয়ে যাবে, যা ইচ্ছে তাই করবে তবে আমাদের পররাষ্ঠ্র মন্ত্রণালয় আছে কি জন্য? মাননীয় পররাষ্ট্র সচিব এবং মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় বলবেন কি, কি হচ্ছে আমাদের বর্ডারগুলোতে? নাকি আমাদের অতি নম্্র ও দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংরাদশীরা বার বার মার খেয়ে যাবে ? নাকি অপনাদের নিশ্চুপতা বিএসএফকে আরো হিংস্র থেকে হিংস্রতর করে তুলবে। সীমান্ত বাসী আপনাদের দিকে চেয়ে আছে। তাদের বাচান, বিএসএফের হিংস্রতা বদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
লেখক : মো. নাজমুল হক