জ্বালানি পরিবহন সংকটের কারণে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৮০ কোটি টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে সিলেটের কয়েকটি গ্যাস প্লান্টকে। ১ জানুয়ারি হঠাৎ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিলেট থেকে ফিরতি ওয়াগনে করে পেট্রোল পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ কারণে সিলেটের গোলাপগঞ্জের রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানিকে (আরপিজিসিএল) উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়। এ কারণে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ন্যাচারাল গ্যাস লিকুইড (এনজিএল) পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে। এছাড়া আরপিজিসিএল ও লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) পান্টে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে ২৪ জানুয়ারী মঙ্গলবার এ ব্যাপারে এক বৈঠকে রেলের ফিরতি ওয়াগনে করে পেট্রোল পরিবহনের সিদ্ধান্ত হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সংশিষ্ট সূত্র জানায়, আরপিজিসিএলে উৎপাদিত পেট্রোল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অনুমোদিত জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা গোলাপগঞ্জের পান্ট থেকে সংগ্রহ করে সিলেটে তাদের ডিপোতে নিয়ে আসে। পরে চট্টগ্রাম থেকে ডিজেল নিয়ে আসা ট্রেনের খালি ওয়াগনে করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। ১ জানুয়ারি হঠাৎ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিলেট থেকে পেট্রোল পরিবহন বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় পেট্রোলের রিজার্ভ ট্যাংক ভর্তি হয়ে যাওয়ায় ১৭ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় আরপিজিসিএল। আরপিজিসিএল সূত্র আরও জানায়, গোলাপগঞ্জে সিলেট গ্যাস ফিল্ডে উৎপাদিত মিথেনের বাই প্রোডাক্ট (উপজাত) হচ্ছে ন্যাচারাল গ্যাস লিকুইড (এনজিএল)। আরপিজিসিএল এ এনজিএল রিফাইন করে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ লিটার পেট্রোল, ৫০ হাজার লিটার ডিজেল ও ২৫ টন এলপিজি উৎপাদন করে। উৎপাদিত ডিজেল দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা হয়। এলপিজি সড়কপথে ও পেট্রোল রেলপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ২০ দিন থেকে পেট্রোল পরিবহন না করায় আরপিজিসিএল পান্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের এনজিএল পুড়িয়ে ফেলতে হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। আরপিজিসিএলের সহকারী প্রকৌশলী আলী জাহিদ খান জানান, আরপিজিসিএল পান্টের রিজার্ভ ট্যাংকগুলোর ধারণ ক্ষমতা ২০ লাখ লিটার। পেট্রোল পরিবহন না হওয়ায় গত ১৬ জানুয়ারি পান্টের সব রিজার্ভ ট্যাংক ভরে যায়। এ অবস্থায় ১৭ জানুয়ারি থেকে আরপিজিসিএল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আরপিজিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক শাহজাহান ভূঁইয়া জানান, মজুদ করা পেট্রোল সরবরাহের আগ পর্যন্ত আরপিজিসিএল উৎপাদনে যেতে পারছে না। রেলের ওয়াগন দিয়ে ফের পেট্রোল পরিবহন শুরু হওয়ায় দু’একদিনের মধ্যে আরপিজিসিএল উৎপাদনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সজল দেব/মৌলভীবাজার