না ফেরার দেশে চলে গেলেন রন্ধন বিষয়ক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সিদ্দিকা কবীর। আজ দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তার বড় ভাইয়ের ছেলে আহমেদ সাদ জানান, প্রায় একমাস আগে হঠাৎ তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। গত ২৯শে জানুয়ারি রোববার আবারও একই উপসর্গ দেখা দিলে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিউতে টানা তিনদিন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চলে তার চিকিৎসা। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। এনটিভিতে ২০০৪ সাল থেকে নিয়মিতভাবে প্রচারিত ‘সিদ্দিকা কবীর রেসিপি’ অনুষ্ঠান করেই মূলত একজন রন্ধন বিষয়ক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।

সিদ্দিকা কবীরের জন্ম ১৯৩৫ সালের ৭ই মে ঢাকার বংশালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর তিনি ইডেন কলেজে গণিত বিষয়ে টানা পাঁচ বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহামা থেকে পুষ্টি বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। আর এরপরই তার জীবনের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে তিনি ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৩ সালে একই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে একই বছরে অবসরে যান। ১৯৭৮ সালে তিনি ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটি লিখে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনেও রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান করে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

২০০৩ সালে তিনি জাতীয়ভাবে পুষ্টিবিদ হিসেবে Woman of the year খ্যাতি লাভ করেন। তার স্বামী সৈয়দ আলী কবির ২০০০ সালে ইন্তেকাল করেন। সিদ্দিকা কবীরের নিজের কোন সন্তান ছিল না। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া তার বড় ভাইয়ের তিন ছেলেকে নিজের সন্তান হিসেবেই লালন পালন করতেন। তার একমাত্র পালিত মেয়ে বর্তমানে সুইডেনে আছেন। তিনি দেশে ফিরলেই সিদ্দিকা কবীরের মরদেহ দাফনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে। স্কয়ার হাসপাতালের হিমাগারেই বর্তমানে সিদ্দিকা কবীরের লাশ রাখা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here