‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের পর দুই দিন মালিকরা গাড়ি কম বের করায় জনভোগান্তির প্রেক্ষাপটে মন্ত্রীর এই নির্দেশনা এল।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মালিক সমিতির দুই-তিন জনের সঙ্গে আলাপ করেছি। আমি তাদেরকে বলেছি বিষয়টি রিভিউ করার জন্য।

“তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযান করছেন বিষয়টি জনস্বার্থে রিভিউ করতে বলেছি। সবাইকে নিয়ে বসে জনস্বার্থে বাস্তবভিত্তিক নিয়ামক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছি।

পরিবহন খাতের প্রভাবশালীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর কণ্ঠে।

কেউ নানা অজুহাতে যদি গাড়ি না চালায় আমরা কি… আমাদের দেশের বাস্তবতায় কি জোর করে গাড়ি নামাতে পারব? আর গাড়ির সাথে যারা জড়িত, তারা খুব সামান্য মানুষ না, তারা অনেকেই খুব প্রভাবশালী।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ১৫ এপ্রিলের পর থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানায়, ঢাকায় সিটিং সার্ভিস বন্ধে ১৬ এপ্রিল থেকে অভিযান চালানো হবে।

গত রোববার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন শুরুর পর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা-মারামারির ঘটনা ঘটে বিভিন্ন স্থানে। অনেক মালিক রাস্তায় গাড়ি না ছাড়ায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।

সোমবারও বাস না পেয়ে বিভ্ন্নি মোড়ে যানবাহনের আশায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের। কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের এক তৃতীয়াংশ গাড়ি রাস্তায় নামেনি।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, রাশ আওয়ারে যে পরিমাণ গাড়ি থাকে সে তুলনায় কম, তবে গাড়ি আছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি জনগণের দুর্ভোগ ও কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি একটু সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে সমাধন করা উচিত। পত্রপত্রিকার লেখালেখিও আমার চোখে পড়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য বুধবার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হবে। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও সেখানে ডাকা হবে।

সড়কে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে ‘সিটিং সার্ভিসকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা’ হচ্ছে- যাত্রীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, এ ধরনের কিছু আছে কি না সেটা রিভিউ করলে বলা যাবে, সেখানে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হবে।

জনস্বার্থ কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সেটা বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও মালিক সমিতির নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছি। বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে সকালে (মঙ্গলবার) ডেকে কথা বলেছি।

পরিবহনের মালিকরা যাত্রীদের জিম্মি করলেও গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হচ্ছে না কেন- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, যখন ফিটনেসের বিরুদ্ধে অভিযান করতে চাই তখন অফ রোড হয়ে যায়, দুর্ভোগ হয়। দুই ধরনের সমালোচনায় তোপের মুখে পড়ি আমরা। দায়টা আসে আমাদের ঘাড়ে। ফিটনেসের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে রাস্তায় গাড়ি নামে না, সেটা আরেকটা বিষয়।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিআরটিসি পুরো সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে বলে আশ্বাস দেন কাদের।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here